ছেলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টায় থাকা অবস্থায় বাবার ঠিকাদারী লাইসেন্স নেওয়া যে ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ , সেই অতি সাধারন কথাটাও প্রধান শিক্ষক বাবাকে বোঝাতে হলো উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে!। আবার এদিকে স্থানীয় মসজিদের মাহফিলে , প্রধান অতিথি হিসাবে দাওয়াত পেলেও যে বাবা সন্তানকে ফোনে জিজ্ঞাসা করেন, যাবেন কিনা অনুষ্ঠানে, সেই ৬৮ বছর বয়সের বাবা ঠিকাদারি লাইসেন্স নেবার কথা ছেলে জানতেনই না, সেটাও বা কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য ব্যাখ্যা তা নিয়েও প্রশ্ন থেকেই যায়। আসিফ মাহমুদের ব্যাখ্যা যায় হোক না কেন, বাবার ঠিকাদারী লাইসেন্স ঘিরে নতুন বিতর্কে জড়ালেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ (Asif Mahmud)। সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসে যে, তাঁর বাবা—a স্কুলের প্রধান শিক্ষক—জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে একটি ঠিকাদারি লাইসেন্স গ্রহণ করেছেন। ঘটনার তীব্র আলোচনার প্রেক্ষিতে তিনি ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য হন। তবে অনেকেরই প্রশ্ন, এটি কি কেবল একটি ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ প্রচেষ্টা?
গতকাল রাত ৯টার দিকে এক সাংবাদিকের ফোনের মাধ্যমে উপদেষ্টা জানতে পারেন তাঁর বাবার নামে একটি ঠিকাদারি লাইসেন্স ইস্যু হয়েছে। তিনি জানান, বিষয়টি সম্পর্কে বাবার সঙ্গে কথা বলার পর নিশ্চিত হন। পরে সেই সাংবাদিক সামাজিক মাধ্যমে তথ্য প্রকাশ করলে শুরু হয় তীব্র বিতর্ক।
ব্যাখ্যায় উপদেষ্টা বলেন, “আমার বাবা আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভুঁইয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। একজন স্থানীয় ঠিকাদার বাবার নাম ব্যবহার করে সুবিধা নিতে চাওয়ায়, তিনি জেলা পর্যায়ের একটি ঠিকাদারি লাইসেন্স করেন।” যদিও তিনি স্পষ্ট করেছেন যে, তার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় বাবার এই লাইসেন্স থাকা স্পষ্টভাবে ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’।
উপদেষ্টা দাবি করেন, বিষয়টি বুঝিয়ে বলার পর তাঁর বাবা নিজেই লাইসেন্স বাতিলের আবেদন করেছেন এবং সেটি এখন বাতিল হয়েছে। তবে সেটি কবে, কোন প্রক্রিয়ায় এবং কত দ্রুত বাতিল হলো—সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তিনি জানাননি।
“বাবা হয়তো কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট বুঝতে পারেননি”—এই বক্তব্য দিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা করলেও, সামাজিক মাধ্যমে প্রশ্ন উঠছে, একজন অভিজ্ঞ শিক্ষক কীভাবে এমন সিদ্ধান্ত নেন, তাও এমন সময়ে যখন তার ছেলে একটি সরকারি পদে অধিষ্ঠিত?
তবে উপদেষ্টা এটিও নিশ্চিত করেছেন যে, সেই লাইসেন্স ব্যবহার করে কোনো দরপত্রে অংশ নেওয়া হয়নি।
তবে পুরো পরিস্থিতি দেখে অনেকেরই প্রশ্ন—ব্যাখ্যা দিয়ে কি সব কিছু ঢেকে দেওয়া যায়? কারণ ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ তো কেবল আইনি ইস্যু নয়, এটি নৈতিকতাকেও স্পর্শ করে। কেউ কেউ বলছেন, বিষয়টি সামনে না এলে হয়তো এই ‘বুঝিয়ে দেওয়া’র কথাটি আজ শোনা যেত না।