রাজধানীর বনানীতে বেসরকারি প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জাহিদুল হাসান পারভেজ হত্যাকাণ্ডে আলোচিত দুই ছাত্রীকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (Detective Branch of Dhaka Metropolitan Police)। বৃহস্পতিবার রাজধানীর জুরাইন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়। ডিবির একাধিক সদস্য এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আটক হওয়া দুই ছাত্রী হলেন— ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেমা তাহসিন ঐশী ও ইংরেজি বিভাগের ফারিয়া হক টিনা। পারভেজ হত্যাকাণ্ডে তাঁদের নাম আসার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাময়িকভাবে তাঁদের বহিষ্কার করে। এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে গত মঙ্গলবার রেজিস্ট্রার ক্যাপ্টেন মোবাশ্বের আলী খন্দকার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ঘটনার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে জানা যায়, গত শনিবার বিকেলে বনানীতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের সামনে ছাত্রদের মধ্যে একটি কথাকাটাকাটির জেরে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২৩ ব্যাচের ছাত্র জাহিদুল হাসান পারভেজকে বুকে ছুরিকাঘাত করা হয়, যা তাঁর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সহপাঠীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের একটি চায়ের দোকানে আড্ডার সময় একটি তুচ্ছ ঘটনা কেন্দ্র করে বহিরাগতদের ডেকে আনা হয়। পরে তাঁদের হাতেই পারভেজ খুন হন বলে দাবি করা হয়েছে।
এই ঘটনায় নিহত পারভেজের মামাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে বনানী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় মোট ৮ জনকে এজাহারনামীয় আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২৫ থেকে ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহারভুক্ত আট আসামির মধ্যে অন্যতম মো. মাহাথির হাসান ও আল কামাল শেখ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এজাহারে উল্লেখ করা অন্যান্য আসামিরা হলেন— মেহেরাজ ইসলাম, আবু জর গিফারী পিয়াস, সোবহান নিয়াজ তুষার, হৃদয় মিয়াজী, রিফাত, আলী ও ফাহিম। তাঁদের মধ্যে সোবহান নিয়াজ তুষার ও হৃদয় মিয়াজী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানার ইউনিটে নেতৃত্বের দায়িত্বে ছিলেন— যথাক্রমে যুগ্ম আহ্বায়ক ও যুগ্ম সদস্যসচিব পদে।
ডিবি জানায়, মামলার তদন্ত চলছে এবং আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার পেছনে কী প্ররোচনা ছিল, কারা পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।