সব কিছু ঠিকঠাক চললে চলতি এপ্রিল মাসের মধ্যেই লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া (Khaleda Zia)। নির্ভরযোগ্য কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, তার সঙ্গে ফিরছেন বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান (Zubaida Rahman) এবং প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান (Syeda Shamila Rahman)।
বর্তমানে তারেক রহমানের বাসায় থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। জানা গেছে, তার পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাকে কাতারের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে দেশে ফেরানো হবে। আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে তাদের ঢাকায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir) সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন (Md. Touhid Hossain) এর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে স্থিতিশীল হলেও পুরোপুরি আশঙ্কামুক্ত নন এবং চিকিৎসকদের পরামর্শেই বিশেষ ব্যবস্থায় দেশে ফিরছেন তিনি।
সরকার ইতিমধ্যে লন্ডন ও দোহার বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার প্রত্যাবর্তনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ৩০ এপ্রিলের মধ্যেই তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় কারাবন্দি হয়েছিলেন তিনবারের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। পরে কভিড-১৯ মহামারির সময় তাকে বিশেষ বিবেচনায় মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন (Md. Sahabuddin) এক আদেশে তার মুক্তি দেন। একইসঙ্গে দুর্নীতির দুটি মামলাতেও তার শাস্তি বাতিল করা হয়।
চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৫ জানুয়ারি তাকে তারেক রহমানের বাসায় নেওয়া হয়। দীর্ঘ ছয় বছরের বেশি সময় পর এ বছর পরিবারের সঙ্গে লন্ডনে ঈদ উদযাপন করেছেন তিনি।
বর্তমানে তিনি লিভার সিরোসিস, কিডনি সমস্যা, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিসসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা অব্যাহত রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৫ জুলাইয়ের পর এই প্রথমবারের মতো বিদেশ সফরে গিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
সবকিছু নির্ভর করছে তার চূড়ান্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষার ওপর, তবে কূটনৈতিক তৎপরতা ও পারিবারিক প্রস্তুতি বলছে—দেশে তার প্রত্যাবর্তন এখন সময়ের অপেক্ষা।
