জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উপদেষ্টা পরিষদের প্রভাবশালী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছেন নাহিদ ইসলাম (Nahid Islam)। এই বিষয়ে সোচ্চার হয়েছেন রাশেদ খান (Rashed Khan), গণঅধিকার পরিষদ (Gonodhikar Parishad)-এর সাধারণ সম্পাদক। তিনি বৃহস্পতিবার (১ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক স্ট্যাটাসে তীব্র ভাষায় প্রশ্ন তোলেন, “আসলেই কি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে, নাকি নিষিদ্ধের ধোঁয়া তুলে রাজনীতি চলবে?”
রাশেদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ ঠিক যেমন ১৯৭১-এর পর জামায়াতে ইসলামীর ওপর “স্বাধীনতা বিরোধী” তকমা লাগিয়ে ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাজনীতি করেছে, তেমনি এখন কেউ কেউ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আওয়াজ তুলে নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান পোক্ত করতে চাইছেন। তিনি দাবি করেন, নাহিদ ইসলাম ছিলেন ড. ইউনূসের পরে উপদেষ্টা পরিষদের সবচেয়ে প্রভাবশালী সদস্য, কিন্তু তারপরও তিনি আ.লীগ নিষিদ্ধে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেননি। এমনকি একবারও এই ইস্যুতে রাজনৈতিক ঐক্যমতের জন্য কোনো জাতীয় সংলাপ ডাকার উদ্যোগও নেননি বলে অভিযোগ করেন রাশেদ।
তিনি আরও বলেন, অনেকে বলছেন এখনো গণমাধ্যম সংস্কার হয়নি। কিন্তু উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় নাহিদ ইসলাম সেই সংস্কারে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা স্পষ্ট নয়। তার মতে, নাহিদ ইসলাম উপদেষ্টা পদে থেকেই যেসব কাজ করতে পারতেন, এখন সেই সুযোগ তার নেই। তাই তিনি প্রশ্ন তোলেন, বর্তমান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ (Asif Mahmud) ও মাহফুজ আলম (Mahfuz Alam) কি সেই দায় নেবেন? তারা কি আওয়ামী ফ্যাসিস্ট লীগকে নিষিদ্ধ করতে জাতীয় সংলাপের উদ্যোগ নেবেন?
রাশেদ খান উপদেষ্টা পরিষদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “উপদেষ্টা পরিষদের সবাই তো বৈষম্যবিরোধী, এমনকি প্রধান উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন ছাত্ররাই আমাদের নিয়োগকর্তা।” তাহলে বর্তমান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলম কেন জাতীয় সংলাপের উদ্যোগ নিচ্ছেন না? তিনি আরও বলেন, “যদি কেউ জাতীয় সংলাপ না ডাকে, তাহলে ধরে নেব, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবির নামে ‘চেতনা ব্যবসা’ চলছে।”
সবশেষে রাশেদ খান এক কঠোর বার্তা দেন, “দাবি একটাই—গণহত্যাকারী দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আর যদি তা না হয়, ভবিষ্যতে যদি আওয়ামী লীগ ফেরে, তাহলে তার সম্পূর্ণ দায় বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদকেই নিতে হবে।”