জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizen Party) বা এনসিপি থেকে সাময়িক অব্যাহতি পাওয়া যুগ্ম সদস্যসচিব গাজী সালাউদ্দিন তানভীর তাঁর পদ ফিরে না পেলে স্বেচ্ছায় জেলে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলছেন, দলে পদচ্যুত হওয়া মানেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগকে প্রতিষ্ঠা দেওয়া, অথচ এখনো তিনি নিজেকে নির্দোষ বলেই দাবি করছেন।
সম্প্রতি একটি জাতীয় গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তানভীর বলেন, “আমি অভিযুক্ত নই। যদি আমার পদ ফিরিয়ে না দেওয়া হয়, আমি নিজেই আইনের হাতে নিজেকে সোপর্দ করবো। কারণ আমি চাই পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক এবং সত্যটা বেরিয়ে আসুক।” তিনি আরও যোগ করেন, “সরকারের কাছে আমার একটাই দাবি—একটা নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক।”
সাক্ষাৎকারে সচিবালয়ে যাতায়াত প্রসঙ্গে তিনি জানান, “৫ আগস্টের আগে আমি একবার সচিবালয়ে গিয়েছি অফিসিয়াল কাজে। এরপর আরও চারবার গিয়েছি। সব মিলিয়ে পাঁচবার গিয়েছি। সচিবালয়ে একজন সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকারের প্রশ্ন থাকলে, তাহলে উপদেষ্টা বা সচিবদের নম্বরগুলো ওয়েবসাইটে প্রকাশ থাকতো না।”
নিজের যানবাহন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তানভীর বলেন, তিনি মাঝেমধ্যে পরিচিত একজনের একটি পাজেরো গাড়ি ব্যবহার করেন।
তিনি এনসিপির আদর্শিক অবস্থান প্রসঙ্গে বলেন, “এই দল গঠিত হয়েছে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পরিপ্রেক্ষিতে। আমরা অতীতের সেই কালচারে ফিরতে চাই না, যেখানে নাটক সাজিয়ে মানুষকে হয়রানি করা হতো, জঙ্গি তকমা লাগিয়ে মামলা দেওয়া হতো।”
তানভীর আরও বলেন, “আজকে মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে, মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে, পারিবারিক পটভূমি না জেনেই মন্তব্য করা হচ্ছে, তার পোশাক নিয়ে কটাক্ষ করা হচ্ছে—এগুলো এনসিপি কখনো মেনে নেবে না। আমি আশাবাদী, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হবে।”
উল্লেখ্য, সম্প্রতি নানা অনিয়মের অভিযোগে গাজী সালাউদ্দিন তানভীরকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দিয়েছে এনসিপি। তাকে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে, যেখানে ৭ দিনের মধ্যে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
চিঠিটি পাঠান এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত। অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে জেলা প্রশাসক নিয়োগে অনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (NCTB) এর পাঠ্যবই ছাপার কাগজে কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ।
তানভীরের দাবি, এগুলো ভিত্তিহীন এবং তার রাজনৈতিক অবস্থান দুর্বল করার ষড়যন্ত্র মাত্র।