আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের নয় মাস পর সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ (Abdul Hamid) দেশ ছেড়েছেন। তবে এই প্রস্থান ছিল একেবারেই নিঃশব্দ ও গোপন। বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের টিজি ৩৪০ নম্বর ফ্লাইটে তিনি ব্যাংকক (Bangkok)-এর উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (Shahjalal International Airport)-এর এক দায়িত্বশীল সূত্র।
সূত্র জানায়, রাত ১১টার দিকে আবদুল হামিদ বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখানে পৌঁছে ইমিগ্রেশনে যাবতীয় যাচাই-বাছাই শেষে তিনি দেশত্যাগের অনুমতি পান। এরপর নির্ধারিত ফ্লাইটে চেপে থাইল্যান্ডের রাজধানীর উদ্দেশ্যে রওনা হন।
গণ-আন্দোলনের মুখে ৯ মাস আগে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে, যার পরিপ্রেক্ষিতে শুরু হয় ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা ও বিচারের প্রক্রিয়া। এর মধ্যেই সাবেক রাষ্ট্রপতির এমন গোপন দেশত্যাগে নানা প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে কিশোরগঞ্জ সদর থানার একটি সূত্র। ২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি দায়ের হওয়া এই মামলায় তার নামসহ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে আওয়ামী লীগের বেশ কিছু প্রভাবশালী নেতার নাম। মামলায় অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina), তার বোন শেখ রেহানা, তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের (Obaidul Quader)।
এই হত্যা মামলার আগে কিশোরগঞ্জ জেলায় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে প্রায় ৫০টি মামলা দায়ের হয়, কিন্তু সেগুলোর কোনটিতেই আবদুল হামিদের নাম ছিল না। তবে ১৪ জানুয়ারির মামলায় তার অন্তর্ভুক্তি, এবং এরপর তার নিরব দেশত্যাগ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে “পলায়নের ইঙ্গিত” বহন করছে।
সাবেক রাষ্ট্রপতির এই প্রস্থান কী উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, না কি আইনি চাপের মুখে সুরক্ষার সন্ধান—তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে জোর আলোচনা।