আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাত দশটা থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ডাক

সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ (Md. Abdul Hamid) সম্প্রতি দেশ ছেড়ে যাওয়ার ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এনসিপি হাসনাত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

নিজের ফেসবুক পোস্টে হাসনাত ঘোষণা করেছেন, “গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের (Awami League) বিচার নিশ্চিত এবং দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না পাওয়া পর্যন্ত আজ রাত দশটা থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচী চলবে। যার এজেন্ডায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট বক্তব্য থাকবে না, তার সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।”

এই ঘোষণা আসার আগে অন্য এক পোস্টে হাসনাত সতর্কভাবে উল্লেখ করেন, “আওয়ামী লীগের বিচার প্রশ্নে যারা মাহফুজ আলমের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করছেন, তারা হয়তো অন্য কারো খেলায় ব্যবহৃত হচ্ছেন, অথবা তাদের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে। মাহফুজ, আসিফ, নাহিদ—তারা নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থেই আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধ ঘোষণা চাইছে। কিন্তু এই চাওয়ার পথে কারা বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে, সেই চক্রকে চিহ্নিত করা প্রয়োজন। মূল সমস্যা শনাক্ত না করে যারা ব্যক্তিগত আক্রোশ, হিংসা বা গোষ্ঠীগত স্বার্থে মাহফুজদের টার্গেট করছেন, আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় ফিরে এলে তার দায় তাদেরও নিতে হবে।”

এই প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি নতুন মাত্রা পেয়েছে, যা বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের উত্তেজনা আরো বাড়াতে পারে। বিশেষ করে হাসনাতের মতো তরুণ ও সরব কণ্ঠস্বর থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে মাঠ পর্যায়ে বিরোধী চাপে কোনো শিথিলতা আসছে না।

একইসাথে, সমর্থকদের ভেতরেও এক ধরনের বিভক্তির আভাস পাওয়া যাচ্ছে, যেখানে কারো কারো ওপর ব্যক্তিগত আক্রোশ বা সন্দেহ প্রকাশ পাচ্ছে। হাসনাতের বক্তব্যে সেই দ্বন্দ্ব ও বিভ্রান্তির প্রতিফলন স্পষ্ট।

বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিক কার্যক্রমের এমন প্রকাশ্য বিভাজন এনসিপি’র সামগ্রিক কৌশলে প্রভাব ফেলতে পারে। এখন দেখার বিষয়, এই দাবিদাওয়া এবং অবস্থান কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারপক্ষ কী প্রতিক্রিয়া জানায় এবং মাঠের আন্দোলন কোন দিকে মোড় নেয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *