বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ছাত্র-জনতার লাগাতার আন্দোলনের চাপে অবশেষে বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ (Awami League) কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। শনিবার (১০ মে) রাত ১১টায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus) এর নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠকে এ ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল (Asif Nazrul) সাংবাদিকদের জানান, পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচারকার্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার রাতে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
এর আগে, শনিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে শাহবাগের গণজমায়েত থেকে হাসনাত আবদুল্লাহ (Hasnat Abdullah), জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক, ঘোষণা দেন যে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরকার স্পষ্ট কোনো রোডম্যাপ না দিলে তারা ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি চালু করবেন। এই ঘোষণা দেওয়ার পর আন্দোলনকারীরা শাহবাগ ছেড়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে রাজসিক মোড়ের দিকে রওনা দেয়।
উল্লেখ্য, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে হাসনাত এক ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বলেছিলেন, যদি সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পরিষ্কার রোডম্যাপ না আসে, তবে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে মার্চ করবেন। সেই সময় উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ছাত্র-জনতার এই আন্দোলন শুরু হয় বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে। শুক্রবার সারাদিনও তারা যমুনার সামনে আন্দোলন চালিয়ে যায়। বিকেলের দিকে আন্দোলনকারীরা শাহবাগে ফিরে এসে সেখানকার প্রধান সড়ক অবরোধ করেন এবং সেখানে অবস্থান করছিলেন। আন্দোলনকারীদের এই লাগাতার চাপ ও জনমতের শক্তি থেকেই জন্ম নেয় ইতিহাসের নতুন অধ্যায়—আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ ঘোষণা।