দিল্লির গোলামির শিকল ছিন্ন করলেও পিণ্ডির দাসত্ব গ্রহণের জন্য নয়—এমনই জোরালো মন্তব্য করেছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব (Asif Mahmud Sajib)। রবিবার (১২ মে) রাত ১০টা ১৯ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ মন্তব্য করেন, যা দ্রুত নড়েচড়ে বসিয়েছে রাজনৈতিক মহলকে।
স্ট্যাটাসে আসিফ মাহমুদ লেখেন, “দিল্লির গোলামির জিঞ্জির ছিন্ন করেছি পিণ্ডির দাসত্ব করতে নয়, ওয়াশিংটন কিংবা মস্কোর দাসত্ব করতেও নয়।” স্বাধীনতার চেতনাকে আরো এক ধাপ উচ্চতর করার প্রত্যয়ও তার বক্তব্যে প্রকাশ পেয়েছে।
এর আগেও নিজের ফেসবুক আইডিতে দেয়া আরেকটি পোস্টে তিনি লেখেন, “স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে সেটাকে রক্ষা করা কঠিন। এর চেয়ে কঠিন সত্য আর নেই। লড়াই যেন থামছেই না।” এ সময় তিনি উল্লেখ করেন, রাজপথের সংগ্রাম সামষ্টিক হলেও, জুলাই আন্দোলনের যোদ্ধাদের একত্রিত হওয়ার মধ্য দিয়ে একটা আশাবাদী আবেগ তৈরি হয়। মাঝে মাঝে তার মনে হয় সবকিছু ছেড়ে আবার রাজপথে ফিরে যেতে।
“সেটাই আমার জায়গা,” বলেন আসিফ, “যেখানে আমি সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।”
তবে, এমন ভাবনা এলেও দায়িত্ববোধ তাকে টেনে রাখে। তিনি বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের পাহারাদার হওয়ার জন্য থাকতে হয়। জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আওয়াজটি পৌঁছে দিতে হয়।”
সরকারের অবস্থান নিয়েও খোলামেলা মন্তব্য করেন উপদেষ্টা। তার ভাষায়, “সরকারে থাকাটা এখন দো-ধারী তলোয়ার হয়ে গেছে। সরকার কোনো ভুল করলে, সেটা সরাসরি আমাদের এখতিয়ারের মধ্যে না পড়লেও জনতার কাঠগড়ায় আমাদের দাঁড় করানো হয়। আবার ছাত্র-জনতা যখন রাজপথে নামে, তখন রাষ্ট্রের শক্তির ভরকেন্দ্রগুলো আমাদের প্রতি সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকায় এবং টার্গেট করে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “স্টাবলিশমেন্ট মনে করে এসব কিছু আমাদের পরিকল্পিত। আবার রাষ্ট্রের বিভিন্ন ভরকেন্দ্রের সাথে জুলাই প্রশ্নে আপস না করায় আমরা তাদের রোষের শিকার হচ্ছি—এটা যেন এক প্রকার অতিরিক্ত শাস্তি।”
আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, “রাষ্ট্র এক বিশাল ও জটিল কাঠামো। এখানে কিছু বাস্তবায়ন করা যে কতটা কঠিন, তা বাইরে থেকে বোঝা যায় না।”
তার এ বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে স্বাধীনতার পরবর্তী সংগ্রাম, সরকারে অবস্থান, এবং স্টাবলিশমেন্টের সাথে সম্পর্ক নিয়ে সরাসরি এমন খোলামেলা প্রতিক্রিয়া সাধারণত খুব কমই শোনা যায়।