সাম্য হত্যাকাণ্ডে উত্তাল ঢাবি , ভিসি ও প্রক্টরের পদত্যাগের দাবি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল (Bangladesh Jatiotabadi Chhatra Dal – JCD) নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যর মর্মান্তিক মৃত্যুর প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ঘটনার বিচার এবং দায়ীদের শাস্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেছে সংগঠনটি।

মঙ্গলবার গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির বাসভবনের সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির (Nasir Uddin Nasir) বলেন, “শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনের চূড়ান্ত ব্যর্থতা প্রমাণিত হয়েছে। সাম্যের হত্যার সুষ্ঠু বিচার এবং দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করছি।”

তিনি ঘোষণা দেন, বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় রাজু ভাষ্কর্যের পাদদেশে ছাত্রদল বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে। এর আগে, রাত ২টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (Dhaka Medical College Hospital – DMCH) থেকে একটি তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা।

এই মিছিলে অংশ নেন ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনসহ দলের শীর্ষ পর্যায়ের বহু নেতা-কর্মী।

মিছিলে তারা ‘আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব দে’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘ক্যাম্পাসে লাশ পড়ে, ভিসি-প্রক্টর কি করে?’ — এমন স্লোগানে উত্তাল করে তোলে পুরো এলাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর উপস্থিত হলে ছাত্রদল কর্মীরা তাঁকে লক্ষ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান (Suhrawardy Udyan)-এর কালী মন্দির সংলগ্ন অংশে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন শাহরিয়ার আলম সাম্য। পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সাম্য ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার সহপাঠী বায়েজিদ কালবেলা বলেন, “রাত ১২টার দিকে আমরা তিনজন বন্ধু আড্ডা শেষে বের হচ্ছিলাম, তখন ৮-১০ জন আমাদের ওপর হামলা করে। সাম্যকে ছুরিকাঘাত করা হয়, প্রচুর রক্তক্ষরণে সে মারা যায়।”

বায়েজিদ আরও জানান, “ঘটনার পর এক হামলাকারীকে ধরা হয়েছিল, কিন্তু পরে শুনি, তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”

ঘটনার বিষয়ে শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মুনসুর (Khalid Monsur) গণমাধ্যমকে জানান, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। আহত সাম্যকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। আমরা তদন্ত শুরু করেছি।”

সাম্যের মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ছাত্রসমাজে শোক ও ক্ষোভের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় শিক্ষার্থীরা কতটা নিরাপদ?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *