টিয়ারগ্যাস-সাউণ্ড গ্রেনেডে ছত্রভঙ্গ জবি শিক্ষার্থীদের ‘লং মার্চ টু যমুনা’

আবাসন ভাতা, পূর্ণাঙ্গ বাজেট অনুমোদন ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন—এই তিন দাবিতে রাজধানীতে ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশের টিয়ারগ্যাস ও সাউণ্ড গ্রেনেডের মুখে পড়লেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (Jagannath University) এর শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৪ মে) দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে কাকরাইল মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে অন্তত ৬ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

সকাল ১০টা থেকেই জবির মূল ফটকে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে যাত্রা শুরু হয় ‘লং মার্চ টু যমুনা’র। গন্তব্য ছিল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন—যমুনা। কাকরাইল এলাকায় পৌঁছালে তাদের পথ আটকে দেয় পুলিশ। বাধার মুখে শিক্ষার্থীরা সড়কে বসে পড়ে এবং ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘দিয়েছি রক্ত, আরও দেব রক্ত’—এমন স্লোগান দিতে থাকেন। কিছুক্ষণ পরই পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও সাউণ্ড গ্রেনেড ছুড়ে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

শিক্ষার্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (University Grants Commission – UGC) এর সঙ্গে বৈঠকে কোনো সমাধান না মেলায় তারা বাধ্য হয়ে রাজপথে নামেন। মঙ্গলবার জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল ইউজিসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে। সেখানে বাজেট বৃদ্ধি ও আবাসন সংকটের বিষয়টি তুললেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

এই পরিস্থিতিতে ‘জবি ঐক্য’ প্ল্যাটফর্ম থেকে তিন দফা দাবিতে সরাসরি যমুনার উদ্দেশ্যে লং মার্চের ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবিগুলো হলো:

  1. আবাসন সংকট নিরসনের আগে পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ভাতা চালু করতে হবে, যা ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর হবে।
  2. বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন দিতে হবে।
  3. জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক (ECNEC) সভায় অনুমোদন দিয়ে অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

এর আগে সোমবার (১৩ মে) জবির ক্যাম্পাসে ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশে এই দাবিগুলো উত্থাপন করা হয়। তখন থেকেই উত্তপ্ত হতে থাকে শিক্ষাঙ্গন। আজকের ঘটনার মধ্য দিয়ে আন্দোলন আরও স্পষ্ট রূপ পেল।

জানা গেছে, টিয়ারসেল নিক্ষেপ, সাউণ্ড গ্রেনেড ও পুলিশি ধাওয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, তবে কারও নাম-পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।

শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা আন্দোলন থেকে পিছু হটছেন না। দাবি মানা না হলে পরবর্তী কর্মসূচি আরও বৃহৎ পরিসরে ঘোষণা দেওয়া হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *