সরকারি উপদেষ্টাদের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী ও কর্মকর্তা এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (National Citizen Party – NCP) এক সাবেক নেতাকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (Anti-Corruption Commission – ACC)। দুর্নীতি ও তদবির বাণিজ্যের অভিযোগে এদের বিরুদ্ধে জিজ্ঞাসাবাদের সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ থেকে ২২ মে পর্যন্ত। এর মধ্যে রয়েছে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সাবেক পিও তুহিন ফারাবি, এবং সাবেক এনসিপি নেতা গাজী সালাউদ্দিন আহমেদ তানভীর।
এই ইস্যুতে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ। সংগঠনটি বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুদক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। তাদের দাবি, অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা হোক। গত মাসেও একই দাবিতে ‘মার্চ টু দুদক’ কর্মসূচি পালন করেছিল সংগঠনটি।
দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বৃহস্পতিবার বিকেলে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, “তুহিন ফারাবি এবং ডা. মাহমুদুল হাসানকে ২০ মে, গাজী সালাউদ্দিন আহমেদ তানভীরকে ২১ মে এবং মোয়াজ্জেম হোসেনকে ২২ মে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে।”
জানা গেছে, ৪ মে থেকে এদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অভিযোগ অনুযায়ী, মোয়াজ্জেম হোসেন ও তুহিন ফারাবি শত কোটি টাকার তদবির বাণিজ্যে জড়িত ছিলেন। একইভাবে এনসিপির সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব সালাউদ্দিন তানভীরের বিরুদ্ধেও কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল এপিএস পদ থেকে পদত্যাগ করেন মোয়াজ্জেম হোসেন। তার আগে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পিও হিসেবে থাকা তুহিন ফারাবিকে দায়িত্ব থেকে সরানো হয়। এনসিপিও ২১ এপ্রিল গাজী সালাউদ্দিন আহমেদ তানভীরকে সাময়িকভাবে দল থেকে অব্যাহতি দেয়।
অভিযোগকারীদের মতে, এদের প্রত্যেকেই ক্ষমতার অপব্যবহার করে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কোটি টাকার লেনদেন করেছেন। তবে এখনও পর্যন্ত তাদের গ্রেপ্তার না হওয়ায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
যুব অধিকার পরিষদের এক নেতা বলেন, “যদি তদন্তে সত্যতা মেলে, তবে এদের শাস্তি হওয়া উচিত দৃষ্টান্তমূলক, নয়তো ভবিষ্যতে কেউই সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে থেকে দায়বদ্ধতা অনুভব করবে না।”
তবে দুদক জানিয়েছে, তদন্ত নিরপেক্ষ এবং পেশাদারিভাবে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অভিযুক্তদের বিষয়ে আলাদা তিনটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে, এবং জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।