বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির দুই শীর্ষ নেতা—আহ্বায়ক আরিফ মঈনউদ্দীন এবং সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন সদ্য বহিষ্কৃত মুখপাত্র ফাতেমা খানম লিজা। রোববার লিজার পক্ষে চট্টগ্রামের আইনজীবী মোহাম্মদ মঞ্জুরুল হক এই দুজনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। নোটিশে বহিষ্কারের পেছনে আনীত অভিযোগগুলোকে ‘অপমানজনক ও ভিত্তিহীন’ উল্লেখ করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে।
আইনি নোটিশে বলা হয়, ফাতেমা খানম লিজার বিরুদ্ধে মাদক সেবন এবং অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার যে অভিযোগ আনয়ন করা হয়েছে, তার কোনো প্রকার প্রমাণ নেই। এমন অভিযোগ সরাসরি চরিত্রহননের শামিল, যা বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনাল আইনের অধীনে অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে। নোটিশে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, বহিষ্কারের মতো গুরুতর সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি, বরং গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে তা প্রচার করে আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে।
নোটিশে দাবি করা হয়, সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কোনো সদস্যকে বহিষ্কারের আগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া বাধ্যতামূলক হলেও ফাতেমা খানম লিজাকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। বরং সরাসরি তাকে বহিষ্কার করে সংগঠনের নিজস্ব আইন ও নীতিমালা লঙ্ঘন করা হয়েছে। এই অবস্থায় ৭ দিনের মধ্যে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে তা সোশ্যাল মিডিয়াসহ সব গণমাধ্যমে প্রচার করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। অন্যথায়, আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবেন বলে হুঁশিয়ার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার ফাতেমা খানম লিজাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (Boishommobirodhi Chhatro Andolon) চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির মুখপাত্র পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। মহানগর কমিটির আহ্বায়ক আরিফ মঈনউদ্দীন (Arif Moinuddin) এবং সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিন (Nizam Uddin) সাক্ষরিত আদেশে জানানো হয়, তিনি মাদকসেবন এবং অনিয়ন্ত্রিত, অসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। তবে লিজা এই অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে ফেসবুকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। একই সঙ্গে তিনি আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার আল্টিমেটাম দেন, যার অংশ হিসেবেই এ নোটিশ পাঠানো হলো।
ঘটনার প্রেক্ষাপটে সংগঠনের অভ্যন্তরীণ বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে। ছাত্র রাজনীতির পরিসরে এমন আইনি পদক্ষেপ বিরল হলেও, এতে বোঝা যাচ্ছে যে সংগঠনটির নেতৃত্ব কাঠামোয় মতবিরোধ কতটা তীব্র হয়ে উঠেছে।