গণ-অভ্যুত্থানের সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারা করছে বিএনপি: এনসিপির অভিযোগ

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) (National Citizens’ Party) অভিযোগ করেছে, বিএনপি (BNP) গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র করছে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বৃহস্পতিবার এক বিক্ষোভ সমাবেশে এনসিপির নেতারা এ অভিযোগ করেন। তারা বলেন, বিএনপি ইচ্ছাকৃতভাবে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করছে, যাতে রাজনৈতিক সুযোগ নেওয়া যায়।

যাত্রাবাড়ী জোনের আয়োজনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার এই সমাবেশে মূল দাবি ছিল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পুনর্গঠন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন। বক্তারা অভিযোগ করেন, বিএনপি তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল আড়াল করতেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন এড়িয়ে যেতে চায়।

এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিন বলেন, “নির্বাচন কমিশন শুরু থেকেই একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের পক্ষে পক্ষপাতিত্ব করছে। এই কমিশন গঠিত হয়েছে একটি ফ্যাসিবাদী আইনের মাধ্যমে, যা অবিলম্বে পুনর্গঠন করতে হবে।” তিনি স্বাধীন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের আহ্বান জানান, যা ইসিকে জবাবদিহির আওতায় আনবে।

দলের যুগ্ম সদস্যসচিব মো. আলাউদ্দিন বলেন, “বিএনপি এখন ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। তারা বাংলাদেশে আরেকটি ওয়ান-ইলেভেন ঘটাতে চায়।” তিনি বলেন, আগের ওয়ান-ইলেভেনের সময় যেভাবে বিচার বিভাগ ও ইসিকে ব্যবহার করে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল, এখনো তারা সেই পথেই হাঁটছে।

যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আলী নাসের খান বলেন, “বিএনপির মতো একটি বড় দল ৭ জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে হতাহতদের বিচার চায়নি। বরং তারা বরাবরই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের পাঁয়তারা করে এসেছে। এখন তারা সেই গণ-অভ্যুত্থানের সরকারকেই হটিয়ে নোংরা পথে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে।”

আলী নাসের আরও দাবি করেন, বিএনপি সংস্কার শুরু হওয়ার আগেই নির্বাচন কমিশনার, অ্যাটর্নি জেনারেল, উচ্চ ও নিম্ন আদালতসহ সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিজেদের লোক বসিয়েছে। এর ফলে বর্তমানে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ বলে কিছু নেই বলেই তিনি মন্তব্য করেন। তাই নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন এখন অত্যন্ত জরুরি বলে জানান তিনি।

দলের যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক এস এম শাহরিয়ার বলেন, “২০২২ সালের কালো আইনের মাধ্যমে যে ইসি গঠিত হয়েছে, তারা একের পর এক নির্বাচন সংস্কারের প্রস্তাব নাকচ করেছে। এই কমিশন গণতন্ত্র চায় না।” একই সুরে মন্তব্য করেন খান মুহাম্মদ মুরসালিন। তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন এখন বিএনপির পার্টি অফিসে পরিণত হয়েছে।” তিনি আরও জানান, সরকার ঘোষিত ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে এখনও ২১ দিন বাকি আছে। এই সময়ের মধ্যে যদি ঘোষণাপত্র না আসে, তবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে হবে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন কদমতলী থানার প্রতিনিধি মো. সাদিকুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম, যাত্রাবাড়ী থানার প্রতিনিধি লাকি আক্তার, মিরাসাদ হোসেন হিমেল, ওয়ারী থানার প্রতিনিধি রিফাত খান এবং মো. রিয়াদ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *