ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হওয়া উচিত—টকশোতে যুক্তিতর্ক তুলে ধরার নির্দেশ তারেক রহমানের

চলতি বছরের ডিসেম্বর বা তার আগেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়া উচিত—এমন অবস্থান আরও জোরালোভাবে জনসমক্ষে তুলে ধরতে দলের সমর্থিত বক্তা ও বিশ্লেষকদের নির্দেশ দিয়েছেন তারেক রহমান (Tarique Rahman)। নির্বাচন ও সংস্কার ইস্যুতে দলটির কৌশলগত অবস্থান স্পষ্ট করতে সম্প্রতি গুলশানে বিএনপি (BNP) আয়োজিত এক বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। টেলিভিশনের টকশোতে অংশগ্রহণকারী দলঘনিষ্ঠ বক্তাদের সঙ্গে এ বৈঠকে তিনি ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন, বিএনপি মনে করে নির্বাচন কেন্দ্রিক সংস্কার কার্যক্রম দ্রুত শেষ করে ডিসেম্বরের মধ্যেই ভোট আয়োজন সম্ভব। সেই যুক্তি ও প্রয়োজনীয় বিশ্লেষণ তুলে ধরতে বলা হয়েছে টিভি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও জনসভায় অংশ নেওয়া বক্তাদের।

বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় সোমবার বিকাল চারটার দিকে, যেখানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, চিকিৎসক, পেশাজীবী ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বসহ ৬২ জন। এ বৈঠকে শুধুমাত্র নির্বাচনের বিষয় নয়, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার (Interim Government) ও তার উপদেষ্টাদের কর্মকাণ্ড নিয়েও তীব্র সমালোচনা উঠে আসে। বক্তারা বলেন, মাত্র ৯ মাসেই সরকারের কিছু উপদেষ্টা ও তাদের ঘনিষ্ঠরা অর্থসম্পদের মালিক হয়ে উঠেছেন, যা ক্ষমতার অপব্যবহারকেই ইঙ্গিত করে।

একজন কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বৈঠকে তারেক রহমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে বলেন—যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন নিয়ে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য রাজনৈতিক চাপ বাড়ানো দরকার। একই সঙ্গে গণমাধ্যমে কথা বলার ক্ষেত্রে আরও কৌশলী ও সংগঠিত হওয়া জরুরি।

তিনি আরও জানান, তারেক রহমান নির্বাচনী আলোচনার বাইরের বিষয় এড়িয়ে যেতে বলেছেন, বিশেষ করে নতুন রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনসিপি) (National People’s Party) সম্পর্কে এখনো স্পষ্ট তথ্য না থাকায় তার প্রসঙ্গ উত্থাপনের প্রয়োজন নেই। টকশোতে যখন যেসব প্রশ্ন আসবে, সেগুলোর সুনির্দিষ্ট উত্তর দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

এছাড়া সরকারের সমালোচনা প্রসঙ্গে রবিবার এক অনুষ্ঠানে তারেক রহমান বলেন, “সরকার যদি জনগণের কাছে জবাবদিহি না করে, তবে সেটি নিজের অজান্তেই স্বৈরাচারে রূপ নেয়।” তিনি বলেন, “সরকারের ব্যর্থতা ঢাকতে বিএনপিকে বারবার লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। কিন্তু জনগণের কাছে ভোটে নির্বাচিত সরকার না হলে সেই সরকার গণতান্ত্রিক নয়।”

তার বক্তব্যে আরও উঠে আসে—সরকারের ভয়ভীতি ও হুমকি উপেক্ষা করে নাগরিকদের উচিত সরকারকে গঠনমূলক সমালোচনার মুখোমুখি করা। জনগণ যেন সরকারের করুণার পাত্রে পরিণত না হয়, বরং সরকারকে বাধ্য করতে হবে জনস্বার্থে কাজ করতে।

বৈঠকে অংশ নেওয়া বক্তারা জানান, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হতে পারে তা এড়াতে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হওয়া অত্যাবশ্যক। আর এই বার্তাই যেন সুনির্দিষ্টভাবে প্রচারিত হয়—এমনটাই নির্দেশ দিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *