দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা যখন চূড়ায়, তখনই সেনাপ্রধানের সঙ্গে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’-এর নামে এক আলোচিত বৈঠকে মিলিত হয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর (Bangladesh Jamaat-e-Islami) শীর্ষ নেতারা। গত শনিবার রাতে এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের আমির শফিকুর রহমান এবং নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। একাধিক রাজনৈতিক জটিলতা এবং নির্বাচনী অনিশ্চয়তার আবহে এই সাক্ষাৎ স্বাভাবিক সৌজন্যের বাইরে কিছু বার্তা বহন করছে কিনা, তা নিয়ে চলছে জোর গুঞ্জন।
বৈঠকটির বিষয়ে জানতে চাইলে তাহের গতকাল সোমবার বলেন, “আসলে এটা তো সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। আর সামগ্রিকভাবে বর্তমান পরিস্থিতির ব্যাপারে কিছুটা কথাবার্তা বলেছি। এই তো।” তবে আলোচনা হয়েছিল কী বিষয়ে—এই প্রশ্নে কিছুটা এড়িয়ে যান তিনি। জানান, “সেনাপ্রধান বা সেনাবাহিনীর কারও সঙ্গে আমাদের ফর্মালি (আনুষ্ঠানিক) কোনো বিষয়ে আলোচনা হয়নি।”
নির্বাচন বা রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে কোনো আলাপ হয়েছে কি না—জানতে চাইলে তাহের আর কিছু বলেননি। শুধু জানান, “যতটুকু বলেছি তা-ই, এর বেশি কিছু বলতে পারব না।”
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে চাপা উত্তেজনা দেখা দেয়। এরপর প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের খবরে পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হয়। এই প্রেক্ষাপটে সর্বদলীয় বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে আলোচনায় আসেন জামায়াত আমির শফিকুর রহমান। একইসঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের দিকনির্দেশনা দিতে আয়োজন করা হয় কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার বৈঠক।
সবশেষে এই বৈঠকের ধারাবাহিকতায় আজ মঙ্গলবার কাকরাইলের ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে জামায়াত। দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জানিয়েছেন, সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান পরিস্থিতি ও দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করা হবে।
যদিও বাহ্যিকভাবে বৈঠকটি সৌজন্য বলে দাবি করা হচ্ছে, তবে সময় ও প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, এই সাক্ষাৎ বড় কোনো রাজনৈতিক সমীকরণের আগাম আভাসও হতে পারে।