ড. ইউনূসের একের পর এক বিদেশ সফর : প্রশ্ন উঠছে খরচ ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে

ঢাকা: যখন দেশজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা তুঙ্গে, বিক্ষোভে উত্তাল রাজপথ, সাধারণ মানুষ উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছে – ঠিক সেই সময় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চার দিনের জাপান সফরে যাচ্ছেন। বুধবার তার এই সফর শুরু হওয়ার কথা। এমন পরিস্থিতিতে দায়িত্বশীল কোনো সরকারপ্রধানের উচিত হতো উত্তেজনা প্রশমন ও সংলাপের মাধ্যমে স্থিতিশীলতা ফেরানো। কিন্তু ড. ইউনূসের এই সফর জনমনে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে: এই বিদেশ ভ্রমণ আসলে কতটা প্রয়োজনীয়?

অন্তর্বর্তীকালীন ও অনির্বাচিত সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ড. ইউনূস যে পরিমাণ বিদেশ সফর করেছেন, তা পাকিস্তানের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফকেও ছাড়িয়ে গেছে। এই সময়ের মধ্যে শুধু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই তার চেয়ে বেশি সফরে গেছেন।

ড. ইউনূসের প্রায় সব বিদেশ সফরের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে তার “থ্রি জিরো” (Three Zeroes) তত্ত্ব নিয়ে বক্তৃতা—যা বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। এসব সফরে “দর্শনীয়” হিসেবে যুক্ত হয় নানা দপ্তরের মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ, যার কোনো বাস্তব ফলাফল এখনো দৃশ্যমান নয়।

সম্প্রতি কাতার সফরে তিনি একটি সাধারণ সম্মেলনে বক্তব্য দিয়েছেন, যেখানে কোনো রাষ্ট্রপ্রধানই উপস্থিত ছিলেন না। এরপর সেখান থেকে তিনি ভ্যাটিকান সিটিতে যান পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে অংশ নিতে, যেহেতু প্রয়াত পোপ ছিলেন তার একান্ত ভক্ত। উল্লেখযোগ্য যে, সার্কভুক্ত কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধান কিংবা কম্বোডিয়া, ভিয়েতনামের মতো সমমর্যাদার কোনো দেশ থেকেও কেউ সেখানে যাননি।

এবারের জাপান সফরও আলাদা কিছু নয়। ৩০তম নিক্কেই ফোরামে তার একটি বক্তৃতা রয়েছে। এই সফরকে যৌক্তিকতা দিতে তিনি অসংখ্য সভা-সাক্ষাতের পরিকল্পনা করেছেন, যেগুলো তার প্রেস উইং প্রচারণায় তুলে ধরবে। সফরের দশ দিনের মাথায় তার আরেকটি বিদেশ যাত্রা নির্ধারিত রয়েছে, এবার একটি পুরস্কার গ্রহণের জন্য। এসব সফরে তিনি একা যান না, তার সঙ্গী হন একটি বড় বহর, যার সব ব্যয় বহন করে রাষ্ট্র।

যদি কোনো নির্বাচিত সরকারপ্রধান এইভাবে একের পর এক বিদেশ সফরে যেতেন, তাহলে তা নিয়ে দেশে প্রবল বিতর্ক হতো। তবে এখন যেহেতু সরকারের প্রধান নির্বাচিত নন, তাই কি আমরা প্রশ্ন তুলবো না?

এখনই সময় তাকে জবাবদিহির আওতায় আনার। কারণ দেশটা কারো বাপের না।

লেখাটি সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরের স্ট্যাটাস থেকে সংগৃহীত ও অনুবাদিত

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *