বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির পরিবেশ বিষাক্ত করে তোলার পেছনে ইসলামি ছাত্রশিবিরের ভূমিকা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা (Umama Fatema)। মঙ্গলবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি ছাত্রশিবির ও এর রাজনীতিকে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন।
উমামা ফাতেমা অভিযোগ করেছেন, “যারা এতদিন ছাত্রলীগ (Chhatra League)-এর ছায়ায় নিজেদের টিকিয়ে রেখেছে, তারাই এখন অন্যদের ‘লীগ দোসর’ বলে অপবাদ দিচ্ছে। গত ১৫ বছর ধরে তারা ছাত্রলীগের হয়ে হলে প্রভাব দেখিয়েছে। আর ৫ আগস্টের পর থেকে ছাত্রশিবির ছাত্ররাজনীতিকে পুরোপুরি টক্সিক করে তুলেছে।”
তিনি লেখেন, ছাত্রশিবির সাধারণ শিক্ষার্থীর ছদ্মবেশে বারবার প্রকৃত সাধারণ ছাত্রদের আন্দোলন নস্যাৎ করেছে। “ফলে ক্যাম্পাসে কোনো নতুন রাজনৈতিক ধারার আলোচনা বা উদ্যম শুরু হওয়ার আগেই তারা তা ব্যাহত করেছে,”—উমামা বলেন।
স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি লিখেছেন, গত ৮ মার্চ আসিয়া ধর্ষণের বিচারের দাবিতে যখন ছাত্রীদের মিছিল সুফিয়া কামাল হল থেকে বের হয়, তখন ‘সাধারণ ছাত্রদের’ কেউ হলপাড়া থেকে বের হয়ে আন্দোলনে যোগ দেয়নি। “পান থেকে চুন খসলে মিছিল করা এই ‘সাধারণ ছাত্ররা’ আসিয়ার জন্য রাস্তায় নামলো না—এটাই তাদের আসল চেহারা।”
তার পোস্টে ছাত্রশিবিরকে ‘বাটপার’ আখ্যা দিয়ে তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের সতর্ক করে লিখেছেন, “ছাত্রলীগের আমলে যারা ন্যূনতম সংগ্রাম করেনি, বরং অন্য ছাত্রদের ওপর হওয়া নির্যাতনকে বৈধতা দিয়েছে, তারাই এখন লীগের দোসর ট্যাগ দিয়ে নিজেদের রাজনীতি বাস্তবায়ন করছে।”
২০২৪ সালের নির্বাচনের প্রসঙ্গে উমামা স্মরণ করেন, “আমরা যখন ৩১ জুলাই থেকে রাজু ভাস্কর্যে ‘ডামি নির্বাচন’ বর্জনের আন্দোলন করি, তখন অনেকে মুখ ফুটে একটি কথাও বলেনি। অথচ এই ভাইব্রাদাররাই তখন ঢাবিতে ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিলের জন্য আন্দোলন করছিল। নির্বাচনের সময় তারা চুপ ছিল। এখন ঠিকাদারি ব্যবসায় মগ্ন। এই ঠিকাদারদের হাতে জুলাইও নিরাপদ নয়।”
উমামা ফাতেমার এই বক্তব্য ছাত্ররাজনীতির বর্তমান বাস্তবতা এবং ভেতরের দ্বিচারিতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। তার ফেসবুক পোস্টটি ইতোমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন তুলেছে।