স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা স্টারলিংক বাংলাদেশে চালু করার পেছনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে তীব্র প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস (Mirza Abbas)। তার দাবি, এ প্রযুক্তি আনা হয়েছে দেশের স্বার্থে নয়, বরং ‘আরাকান আর্মির’ মতো বিদেশি শক্তিকে সুবিধা দেওয়ার জন্য। তিনি সতর্ক করেন, “আমরা জীবন থাকতে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করব।”
বুধবার (২৮ মে) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা’ কর্মসূচিতে বক্তব্যকালে মির্জা আব্বাস এসব মন্তব্য করেন। এই সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। এতে ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও ফরিদপুর বিভাগের প্রতিনিধি নেতারা অংশ নেন।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তারেক রহমান (Tarique Rahman), যিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন।
‘করিডোর’ ও ‘নিউম্যুরিং টার্মিনাল’ নিয়েও আপত্তি
স্টারলিংকের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা আব্বাস বলেন, “করিডোর নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। লাভ-লোকসান দেখতে চাই না। আমরা যেমন ছিলাম, তেমনই থাকতে চাই। আবার নিউম্যুরিং টার্মিনালও দিয়ে দিতে চাচ্ছেন। দেশের মানুষকে বোকা ভাববেন না। স্টারলিংক এনেছেন কার জন্য? আরাকান আর্মির জন্য। করিডোরও তাদের মাল-মসলা পাঠানোর জন্য। আমরা তো এতদিন স্টারলিংক ছাড়াই চলেছি।”
তিনি আরও বলেন, “এই সরকারের মাথা থেকে নিচ পর্যন্ত পচে গেছে। তারা যদি আরও কিছুদিন ক্ষমতায় থাকে, তাহলে আওয়ামী লীগের চেয়েও ভয়াবহ হয়ে উঠবে।”
সরকারকে ‘ঔপনিবেশিক’ আখ্যা
তার বক্তব্যে সরকারকে ‘ঔপনিবেশিক’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, “বর্তমান সরকার গণমানুষের আকাঙ্ক্ষার সরকার নয়। এটা আস্থার প্রতীক হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আমরা পেয়েছি অবজ্ঞা। যারা সরকারে আছেন, তাদের অনেকেই দেশের নাগরিক নন। ৯ মাসে যা পারেনি, ৯ বছরে পারবে না, এমনকি ৯০ বছরেও না।”
তিনি আহ্বান জানান, “জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে যেটুকু করা যায়, করুন।”
চাঁদাবাজি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রসঙ্গে বক্তব্য
চাঁদাবাজির প্রসঙ্গ টেনে মির্জা আব্বাস বলেন, “বিএনপির নাম ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন স্থানে কেউ কেউ চাঁদাবাজি করছে। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রশ্ন করতে চাই—তারা কেন এসব চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তার করছে না?”
অন্যান্য নেতাদের বক্তব্য
বিএনপির এই সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান (Abdul Moyeen Khan), গয়েশ্বর চন্দ্র রায় (Goyeshwar Chandra Roy), আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (Amir Khasru Mahmud Chowdhury), সালাহউদ্দীন আহমেদ (Salahuddin Ahmed) প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্না এবং সঞ্চালনায় ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির।