বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপটি আরও ঘণীভূত হয়ে নিম্নচাপে রূপ নেওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এর সরাসরি প্রভাবে দেশের ছয়টি বিভাগের ওপর দিয়ে প্রবল বৃষ্টিপাত এবং কিছু এলাকায় ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (Bangladesh Meteorological Department)।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, গত বুধবার (২৮ মে) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক এলাকায় ২৪ ঘণ্টায় ৪৪ থেকে ১৮৮ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে। এই অতিভারি বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান এবং কক্সবাজারের পাহাড়ি এলাকায় পাহাড়ধসের ঝুঁকি প্রকট হয়ে উঠছে।
আবহাওয়ার এই রূপ বদলের সঙ্গে সঙ্গে সতর্কবার্তা দিয়েছেন কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ (Mostofa Kamal Polash)। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, এবারের লঘুচাপটি গত বছরের মতোই নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চল দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে—যা সে সময় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি করেছিল। পলাশের মতে, ২৮ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে টানা বৃষ্টিপাত হতে পারে, যা বড় ধরনের বন্যার পথ প্রশস্ত করছে।
ইউরোপীয় আবহাওয়া মডেলের পূর্বাভাসও কম চিন্তার নয়। চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও রংপুর বিভাগ ছাড়াও ভারতের ত্রিপুরা, আসাম ও মেঘালয়েও এর প্রভাব পড়তে পারে। পলাশ বলেন, “বন্যা পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হবে, তা নির্ভর করছে—লঘুচাপটি কত ধীরে অগ্রসর হয়, চট্টগ্রাম বিভাগ ও ত্রিপুরার উপর কতক্ষণ স্থায়ী হয়, এবং ত্রিপুরার বাঁধের গেট খোলা হয় কি না, তার উপর।”
তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, “কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ফেনীজুড়ে যদি পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকে, তবে গত বছরের মতোই বড় ধরনের বন্যার সম্মুখীন হতে পারে এসব এলাকা।”
বিশেষজ্ঞদের এই সতর্কবার্তার প্রেক্ষিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর ও প্রশাসন সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। সেই সঙ্গে সবাইকে প্রশাসনের দেওয়া নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়েছে, যাতে করে সম্ভাব্য দুর্যোগে প্রাণহানি বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যায়।