‘ইন্টেরিম রিমেম্বার, নির্বাচন ইন ডিসেম্বর’: বিএনপির স্লোগানে রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ

দেশের রাজনীতিতে নতুন করে আলোড়ন তুলেছে বিএনপি (BNP)। ‘ইন্টেরিম রিমেম্বার, নির্বাচন ইন ডিসেম্বর’—এই নতুন স্লোগান সামনে এনে দলটি সরাসরি সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ওপর চাপ বাড়াতে শুরু করেছে। বুধবার (২৮ মে) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে এই স্লোগান উচ্চারিত হয়, যেখানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman) লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।

সমাবেশটি আয়োজন করে দলের তিন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসংগঠন—জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদলস্বেচ্ছাসেবক দল। সমাবেশ থেকেই ছড়িয়ে পড়ে বিএনপির সাম্প্রতিক এই বার্তা: “ইন্টেরিম রিমেম্বার, নির্বাচন ইন ডিসেম্বর”—একটি শক্তিশালী হুঁশিয়ারি যার লক্ষ্য স্পষ্টভাবে নির্বাচনকাল নির্ধারণে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষকে সচেতন করা।

তারেক রহমান তার বক্তব্যে বলেন, “আমরা ডিসেম্বরের মধ্যেই একটি জাতীয় নির্বাচন চাই। একটি সুস্থ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি নির্বাচিত সরকার গঠন চাই।” তিনি আরও বলেন, “যাতে ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, এখন থেকেই তার প্রস্তুতি নিতে হবে। জনগণই ঠিক করবে কে তাদের প্রতিনিধি হবে।”

তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়ার সৈনিক, বেগম খালেদা জিয়ার কর্মীদের বলছি—আপনারা জনগণের কাছে যান। তাদের প্রত্যাশা জানুন, বোঝার চেষ্টা করুন। কারণ জনগণই বিএনপির সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস।”

তার এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আন্দোলনের বার্তা আরও স্পষ্ট হয়, এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তার প্রতিফলন দেখা যায়। খুব দ্রুত “ইন্টেরিম রিমেম্বার—ইলেকশন ইন ডিসেম্বর” ব্যানারে ভরে ওঠে ফেসবুক, টুইটারসহ নানা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। কেউ পোস্টারে, কেউ হ্যাশট্যাগে, কেউবা ডিজিটাল ব্যানারে তুলে ধরছে এই স্লোগান।

তবে এটি সংগঠিত প্রচারণা, নাকি দেশে ও প্রবাসে থাকা লক্ষাধিক বিএনপি কর্মী-সমর্থকের নিজস্ব উদ্দীপনা—সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি বিএনপি। দলের পক্ষ থেকেও এখনো এ বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা আসেনি।

তারেক রহমান এদিন তার বক্তব্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus) প্রসঙ্গেও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “উনার প্রতি আমাদের সহানুভূতি আছে। আমরা মনে করি, কিছু দুষ্কৃতিকারী উপদেষ্টা উনার চারপাশে ঢুকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। তবে আমরা বিশ্বাস করি, তিনি দেশের স্বার্থে অবদান রাখবেন।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপির এই স্লোগান একটি কৌশলগত বার্তা—যা দলের ভবিষ্যৎ রোডম্যাপ ও আন্দোলনের নতুন দিক নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আবারও বোঝা গেল, বিএনপি রাজপথে ফের সক্রিয় হতে চাইছে, এবং এবার তাদের বার্তা—সময়সীমা নির্দিষ্ট, স্লোগানও ধারালো।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *