আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামি দলগুলো এবার ঐক্যবদ্ধভাবে এক বাক্সে ভোট দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন মুফতি রেজাউল করীম আবরার (Mufti Rezaul Karim Abrar)। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের চুনকা পাঠাগারে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, “আমাদের দেশের ইসলামি দলগুলো এবার একমত হয়েছে—ভোটের বাক্স এবার একটি হবে। আমরা তৃণমূল থেকে দেশের সর্বত্র এ বিষয়ে কাজ করব।”
রেজাউল করীম জানান, এই ঐক্য শুধু রাজনৈতিক কৌশল নয়, বরং এটি চাঁদাবাজি, দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একটি ‘আধ্যাত্মিক’ প্রতিরোধও বটে। তিনি বলেন, “চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজদের নরক থেকে মুক্তি পেতে হলে ইসলামের বিকল্প নেই। সেজন্যই আমরা নির্বাচনে পিআর (সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন) প্রস্তাব করেছি।”
সেকুলার ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ‘ব্যর্থতা’র দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “বিগত ৫২ বছরে মানুষ জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি দেখেছে। কিন্তু কেউ সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়ের কাঙ্ক্ষিত রূপ দিতে পারেনি।”
তিনি দেশের বিচারব্যবস্থা নিয়েও কঠোর সমালোচনা করেন। “ব্রিটিশ আমলের আইন দিয়ে আজও মানুষ বিচার পায় না। এই আইন দিয়ে একটা কুকুরেরও ন্যায় বিচার হবে কিনা সন্দেহ। নিরীহ মানুষ ১২ বছর, রাজনীতিবিদ ১৭ বছর আর আলেম ১৫ বছর জেলে থাকে—এটি কোনো ন্যায়বিচার নয়। আমরা শরিয়াহভিত্তিক আইন চাই।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, এবার ইসলাম সংসদে প্রবেশ করবে। “বাংলাদেশের মানুষ এখন আগের মতো আরেকটি ব্যর্থ রাজনৈতিক শক্তিকে চায় না। এখন কেবল ইসলামই মাঠে আছে। আপনারা প্রস্তুত হন, আমরা ইসলামকে জাতীয় সংসদে প্রতিষ্ঠা করব।”
গত ৫ আগস্টের পর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ওলামা ও তৌহিদি জনতা মন্দির পাহারা দিয়েছে, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেছে, এবং অরাজকতা ঠেকাতে দায়িত্ব পালন করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তার ভাষায়, “যখন রাষ্ট্র নীরব ছিল, তখন ওলামারা রাস্তায় নেমেছিল। অথচ এক শ্রেণির মানুষ তখনও চাঁদাবাজি ও ঘাট দখলের মতো কাজে ব্যস্ত ছিল। এদের মানুষ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।”
এ সময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ঐক্যজোট-এর চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল কাদির, মহানগর ইসলামী আন্দোলন সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মঈনুদ্দিন আহম্মেদ এবং মহানগর জামায়াতের আব্দুল জব্বার সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মুফতি আব্দুল হাকিম আদ দিফায়ী।
