ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে ফের বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক এম এ আজিজ। সম্প্রতি এক গণমাধ্যমে আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি দাবি করেন, “ড. ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus) আসলে বিদেশি সরকার, বাংলাদেশের সরকার নন।” তার মতে, ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা পরিষদের বেশিরভাগ সদস্যই বিদেশি নাগরিক, এবং ড. ইউনূস নিজেই নাকি চারটি দেশের নাগরিকত্ব বহন করেন।
প্রেস সেক্রেটারির প্রসঙ্গ টেনে এম এ আজিজ বলেন, “এই লোক (প্রেস সেক্রেটারি) গুহা থেকে বেরিয়ে এসেছে। আপনাকে চিনত না, আমাকেও চিনত না, কামাল ভাইকেও চিনত না। আমরা কেউই চিনতাম না। অথচ সে এখন সরকারের মুখপাত্র।”
সরকার পতনের ভবিষ্যদ্বাণী
আলোচনার এক পর্যায়ে এম এ আজিজ সরাসরি মন্তব্য করেন, “এই সরকারের পতন হবে, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই। প্রেস সেক্রেটারি লোকটা দেশের পরিস্থিতি খারাপ বুঝেই বিদেশে চলে যাবে।” তিনি আরও দাবি করেন, সরকারের আমলে এর মধ্যেই লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। সম্প্রতি ধরা পড়া দু’জন এপিএস (Assistant Personal Secretary)-এর ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এইসব তো তারই প্রমাণ।”
‘ছাত্র দরবেশ’ ও প্রশাসনিক নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান (Salman F Rahman)-কে ইঙ্গিত করে এম এ আজিজ বলেন, “আমরা আগে বলতাম দরবেশ, এখন ছাত্র দরবেশ বেরিয়ে এসেছে।” তিনি অভিযোগ করেন, “প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে ছাত্র বসিয়ে দিয়েছে। এমনকি রেলওয়েতে তিনজন ইন্টারমিডিয়েট পাস ছাত্র নিয়োগ দিয়েছে ড. ইউনূস, যারা এখন রেলওয়ের কার্যক্রমে অচলাবস্থা তৈরি করছে।”
অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেন এম এ আজিজ। তিনি বলেন, “বিশ্বব্যাংক (World Bank) জানিয়েছে, আগামী বছর আমাদের জিডিপি হবে মাত্র ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। এটা অর্থনৈতিক দুর্ভিক্ষের ইঙ্গিত।” তিনি আরও যোগ করেন, “বাংলাদেশে কখনও এমন কম জিডিপি হয়নি।”
গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণ ফোন নিয়ে ক্ষোভ
এম এ আজিজের অভিযোগ, ড. ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ ব্যাংক (Grameen Bank) ৬৬৬ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করে নিয়েছে। একইভাবে গ্রামীণ ফোন (Grameenphone)-এর ৪ হাজার কোটি টাকাও মওকুফ করা হয়েছে। “স্টারলিংক (Starlink)-এ গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণ ফোন অংশীদার। এতে বাংলাদেশের লাভটা কী?”—প্রশ্ন তোলেন তিনি।
সরকারের অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারণ থেকে শুরু করে প্রশাসনিক নিয়োগ পর্যন্ত একের পর এক প্রশ্ন তুলেছেন এই সিনিয়র সাংবাদিক। তার কথায় উঠে এসেছে গভীর হতাশা, ক্ষোভ ও রাজনীতিক পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কার সুর।