অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) আতিক মোর্শেদের বিরুদ্ধে উঠেছে বিপুল অঙ্কের দুর্নীতির অভিযোগ। ডাক বিভাগের আওতাধীন মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিষ্ঠান নগদ (Nagad) থেকে ১৫০ কোটি টাকা ‘বেহাত’ বা গায়েব হয়ে যাওয়ার অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন তিনি। এছাড়াও, নিজের স্ত্রীসহ আত্মীয়স্বজনদের প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানোর অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
তবে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আতিক মোর্শেদ বলেছেন, তিনি এখন পর্যন্ত মাত্র দুইবার নগদ অফিসে গেছেন এবং তা ছিল অফিসিয়াল কাজের অংশ হিসেবে। স্ত্রীকে চাকরি দিতে কোনো রকম প্রভাব খাটানো হয়নি বলেও তার দাবি। “স্ত্রী মেধা ও যোগ্যতা দিয়েই চাকরি পেয়েছেন,” বলেন তিনি।
এ ঘটনা সামনে আসার পর আবারও আলোচনায় এসেছে উপদেষ্টাদের পিএ ও পিএস (ব্যক্তিগত সহকারী ও ব্যক্তিগত সচিব) নিয়োগের পদ্ধতি ও তাঁদের দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়টি। এর আগেও কয়েকজন উপদেষ্টার পিএ-পিএসদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে এসব অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (Anti-Corruption Commission – ACC)।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে চলছে উত্তপ্ত আলোচনা। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে এসব পিএ-পিএসরা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে প্রভাব বিস্তার করতে পারলেন?
এ নিয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আব্দুন নূর তুষার (Abdun Noor Tushar)। শুক্রবার (৩০ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি লেখেন, “কিছু উপদেষ্টার ব্যক্তিগত পছন্দে নিয়োগকৃত পিএ ও এপিএসরা একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হচ্ছেন। তারা তাহলে কোন যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়েছিলেন?”
তুষার তার পোস্টে আরো বলেন, “সততা কি প্রাথমিক বিষয় নয়? বুঝতেই পারছি, পৃথিবীতে অসংখ্য পিএ-এপিএস নৈতিকতাহীন দুর্বৃত্ত হতে পারে, তবে একজনও অসৎ উপদেষ্টা নেই। সকলেই ফেরেশতা। তারা শুধু এপিএস বাছতে ভুল করেন। বাকি সব ঠিক।”
নগদ-এর মত একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় আর্থিক সেবাপ্রতিষ্ঠানে এমন দুর্নীতির অভিযোগ দেশের অর্থনীতির নিরাপত্তা এবং রাষ্ট্রীয় স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে।