নির্বাচন, কিছু জরুরি সংস্কার ও বিচার—এই তিন লক্ষ্যেই কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার: অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন

নির্বাচন, কিছু জরুরি সংস্কার এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার—এই তিন মূল লক্ষ্য সামনে রেখেই কাজ করছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এমনটাই জানিয়েছেন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ (Dr. Salehuddin Ahmed)।

শুক্রবার এক বক্তব্যে তিনি স্পষ্ট করেন, দীর্ঘমেয়াদি নয় বরং সীমিত পরিসরের কাঠামোগত সংস্কারে সরকারের মনোযোগ রয়েছে। যেমন—জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR), ব্যাংকিং খাত ও পুলিশ প্রশাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাগুলোতে নীতিগত রূপরেখা প্রণয়নের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অতীতে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে এবার সরকার চেষ্টা করছে, যেন সে ইতিহাস পুনরাবৃত্তি না হয়। “সব রাজনৈতিক দল একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে। যদি দলগুলো গণতান্ত্রিক আচরণ করে, তাহলে সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব,” বলেন সালেহউদ্দিন।

তিনি উল্লেখ করেন, গণতন্ত্র শুধু রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় নয়, বরং রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরেও চর্চিত হওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে তিনি রাজনৈতিক ঐকমত্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

নির্বাচনকালীন প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়েও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রধান উপদেষ্টার বরাত দিয়ে তিনি জানান, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের রোডম্যাপ প্রকাশ করা হতে পারে।

অবস্থান কর্মসূচি ও আন্দোলন প্রসঙ্গে তার মত, “এসব কর্মসূচি প্রাত্যহিক জীবনে বিঘ্ন ঘটায়। আগের সরকারের সময় তা কঠোরভাবে দমন করা হতো, কিন্তু এখন আমরা গণতান্ত্রিক সীমাবদ্ধতায় কাজ করছি।”

এনবিআর পৃথকীকরণ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমরা রাজস্ব নীতি বিভাগ ও রাজস্ব বাস্তবায়ন বিভাগকে আলাদা করেছি। একটিই প্রতিষ্ঠান নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন—দুটো দায়িত্ব নিতে পারে না। এটা কোনো আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।”

এই সংস্কার থেকে সরকার পিছু হটবে না বলেও তিনি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, এনবিআরের কর্মীদের বাস্তব সমস্যা ও উদ্বেগ সরকার আমলে নিচ্ছে এবং যৌক্তিক সমাধানে কাজ করছে।

আসন্ন বাজেটে মহার্ঘ ভাতার প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে। ঘোষণা দিলে বাস্তবায়ন করতেই হবে। কতটা দেওয়া সম্ভব, সেটা আমরা ব্যয় কাঠামো বিশ্লেষণ করে দেখব।”

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বারবারই স্বচ্ছতা, গণতন্ত্র ও দায়িত্বশীলতার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন, যা তার মতে, একটি অন্তর্বর্তী সরকারের মূল ভিত্তি হওয়া উচিত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *