চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব এলাকায় গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের মানববন্ধনে নারীকে লাথি মেরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার মুখে পড়া আকাশ চৌধুরীকে বহিষ্কার করেছে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াত (Chattogram City Jamaat-e-Islami)। প্রথমে আকাশের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করলেও, পরবর্তীতে বিভিন্ন নেতার সঙ্গে তার ছবি ভাইরাল হলে দলটি তাকে নিজেদের কর্মী হিসেবে স্বীকার করে নেয়। দায় স্বীকারের রাজনীতি জামায়াতের মধ্যে বরাবরই অনুস্থিত । তবে এবার অন্তত পক্ষে দায় স্বীকার করতে বাধ্য হলো জামায়াত।
ঘটনার দিন, অর্থাৎ ২৮ মে, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব এলাকায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে আয়োজিত কর্মসূচির পাশাপাশি গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের ডাকা মানববন্ধনে হামলা চালানো হয়। এই সময় অন্তত ১৫ জন আহত হন। সেখানেই আকাশ চৌধুরী এক নারীকে লাথি মারেন, যার ছবি দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং জনমনে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়।
প্রথমে জামায়াত দাবি করে, আকাশ তাদের কেউ নন। কিন্তু পরবর্তীতে আকাশ চৌধুরী (Akash Chowdhury)-এর জামায়াত নেতাদের সঙ্গে একাধিক ছবি ভাইরাল হলে, পরিস্থিতি পাল্টায়। শুক্রবার (৩০ মে) এক বিবৃতিতে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ (Mohammad Ullah) জানান, ‘ঘটনার দিন আকাশ অনুমতি না নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়েছিল এবং তার কার্যক্রম নিন্দনীয়। এজন্য তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হলো।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “জামায়াতে ইসলামী একটি সুশৃঙ্খল ও দায়িত্বশীল সংগঠন হিসেবে দেশব্যাপী পরিচিত। আমরা কোনোভাবেই অনাকাঙ্ক্ষিত এমন কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় দিতে পারি না। তাই কেন্দ্রীয় দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে আকাশ চৌধুরীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।”
ঘটনার বিস্তারিত অনুসন্ধানে জানা গেছে, আকাশ চৌধুরী চট্টগ্রামের সাতকানিয়া পৌর এলাকার নেছার আহদের ছেলে। তিনি শিবিরের চট্টগ্রাম মহানগর পর্যায়ের ওয়ার্ড স্তরের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। অতীতেও তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের মুরাদপুরে একটি সুন্নি সংগঠনের কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগ ছিল।
এ ঘটনায় জামায়াতের বিবৃতির মাধ্যমে দলটির আত্মপক্ষ সমর্থন স্পষ্ট হলেও, প্রথমে আকাশের সঙ্গে সম্পর্ক অস্বীকার করা এবং পরে কর্মী হিসেবে স্বীকার করে বহিষ্কার—এই নীতিগত দ্ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মাঝে।