ডিসেম্বরে নির্বাচন চাই দেশের সব গণতন্ত্রপন্থী দলই—জোরালো দাবি ১২-দলীয় জোটের

দেশের সকল দেশপ্রেমিক ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল চলতি বছরের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন চায় বলে জোর দাবি তুলেছে ১২–দলীয় জোট (12-Party Alliance)। আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই জোট জানায়, কেবল একটি দল নয়, নয় মাস ধরে দেশের প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক সব দলই নির্বাচন আয়োজনের জন্য ডিসেম্বর মাসকেই নির্ধারণ করেছে।

জাপান সফররত প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus) সম্প্রতি এক বক্তব্যে দাবি করেন, “মাত্র একটি দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়”। এ মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ১২-দলীয় জোট বলেছে, এই বক্তব্য সত্যনিষ্ঠ নয় এবং বাস্তবতাকে আড়াল করার অপচেষ্টা।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যারা প্রকৃত অর্থে দেশ ও জনগণের অধিকার রক্ষা করতে চায়, তারা সবাইই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে। আমরা বহুবার এই বিষয়ে অবস্থান জানিয়েছি—সভা, সেমিনার, সমাবেশ, এমনকি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সরাসরি বৈঠকেও এই দাবি তুলেছি।’

প্রধান উপদেষ্টার কৌশলকে ‘নির্বাচন বিলম্বিত করার প্রয়াস’ বলে অভিহিত করে জোট নেতারা বলেন, তিনি কিছু জনবিচ্ছিন্ন, মৌলবাদী ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী দলকে পাশে রেখে রাজনৈতিক সমাধানকে জটিল করে তুলছেন। দেশের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও সময়মতো নির্বাচন আয়োজনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এখনো সময় আছে—প্রধান উপদেষ্টা চাইলে অবিলম্বে একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করে জাতিকে সংকটমুক্ত করতে পারেন। অন্যথায় দেশের মানুষ নিজেদের অধিকার রক্ষায় প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। তখন কেউই মৌলবাদী বা জনসমর্থনহীন দলকে পাশে পাবে না।’

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, যারা সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, তাদের অনেকেই ‘স্বৈরাচারী শাসকের পদলেহনকারী’ এবং ‘স্বৈরাচারী হাসিনার আঁচলের নিচে আশ্রয় নেয়া’ বলেও মন্তব্য করা হয়। এই ধরনের আচরণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশীদারদের ব্যথিত করেছে বলেও জানায় জোট।

১২–দলীয় জোটের বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির (Jatiya Party) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, মুখপাত্র বাংলাদেশ এলডিপি (Bangladesh LDP) চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, সমন্বয়ক বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, লেবার পার্টি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ফারুক রহমান, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দীন পারভেজ, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুর রকিব, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি এম এ মান্নান এবং প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দলের (পিএনপি) চেয়ারম্যান ফিরোজ মো. লিটন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *