“নির্বাচন দিলে দেন, না দিলে আমরাই তারিখ দিয়ে নির্বাচন করব”—এই বক্তব্য যারা দেন, তারা ফলাফলের জন্য বিকেল ৫টা পর্যন্তও অপেক্ষা করবেন না—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ (Dr. Shafiqul Islam Masud)। শুক্রবার (৩০ মে) ঢাকার একটি মিলনায়তনে আয়োজিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সুপ্রিম কোর্ট ও জজ কোর্ট বিভাগের অগ্রসর কর্মীদের দক্ষতা ও মানোন্নয়ন বিষয়ক কর্মশালায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
জামায়াতে ইসলামী (Jamaat-e-Islami)-র ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের এই সেক্রেটারি বলেন, “যে রাজনৈতিক দল আজ বলে—ডেট না দিলে আমরা ডেট দিয়ে দেব—তারা তো ভবিষ্যতে বলবে, বিজয় ঘোষণা না করলে আমরাই করে দেব। অথচ এখন দেশের মানুষ বলছে—আগে বিচার চাই, আগে রাষ্ট্রীয় সংস্কার চাই, তারপর নির্বাচন।”
সরকারবিরোধী আন্দোলনে কণ্ঠ মিলিয়ে ড. মাসুদ বলেন, “আপনারা যে ভাষায় হুমকি দিচ্ছেন, তা আমরা এমনকি আওয়ামী লীগ (Awami League)-এর আমলেও শুনিনি। তারা ফ্যাসিস্ট হলেও সংবিধান ও আদালতের দোহাই দেয়। কিন্তু আপনারা এমন ভাষা বলছেন যে, তা জনগণকে হতবাক ও বিব্রত করছে।”
তিনি আরও বলেন, “আপনারা বলছেন—বিব্রত আমরা; কিন্তু আসলে বিব্রত জনগণ। আপনারা বলছেন—হতাশ আমরা; কিন্তু হতাশ জনগণ। আপনারা যেভাবে কথা বলছেন, তাতে স্পষ্ট যে, আপনারা জনগণকে ব্যবহার করছেন, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাদের পক্ষে কোনো ত্যাগ নেই।”
জামায়াতের অবস্থান তুলে ধরে ড. মাসুদ বলেন, “আমরা বলি—প্রয়োজনে আবার রক্ত দেব, কিন্তু এই ফ্যাসিবাদকে আর দাঁড়াতে দেব না। জাতি আর কত রক্ত দেবে? ছাত্র, তরুণ, মা-বোন এমনকি নবজাতক পর্যন্ত গুলিতে মারা গেছে। এসবের হিসাব কে দেবে?”
তিনি অভিযোগ করেন, যারা আন্দোলনের নামে ‘রক্ত দেয়ার’ কথা বলেন, তারা নিজেরা এসি কক্ষে আরামে থাকেন, বিদেশ সফরে যান, আর জনগণকে ব্যবহার করেন রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে। “তাদের কথার পেছনে কোনো আন্তরিকতা নেই, আছে শুধু স্বার্থ।”
এ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর কর্মপরিষদের সদস্য ও পেশাজীবী জোন-১-এর সহকারী পরিচালক অ্যাডভোকেট এস. এম. কামাল উদ্দিন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল (Nurul Islam Bulbul)।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির শিক্ষাবিদ আব্দুস সবুর ফকির এবং ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ নিজেও বক্তব্য প্রদান করেন।