বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠাই তাঁদের মূল লক্ষ্য—দল নয়, ইসলামকে রাষ্ট্রক্ষমতায় পৌঁছে দিতে চান তাঁরা। রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের জেলা ও মহানগর কর্মপরিষদ সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত দুইদিনব্যাপী এক শিক্ষাশিবিরের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
গত ৩০ ও ৩১ মে নীলফামারীর সৈয়দপুরে অনুষ্ঠিত এ শিবিরে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “ইখলাসের সঙ্গে দ্বীনের কাজ করতে হবে, দায়িত্ব পালন করতে হবে আন্তরিকতার সঙ্গে। জামায়াত নয়, আমরা ইসলামকে ক্ষমতায় আনতে চাই।” তিনি বলেন, ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থায় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে মদিনার আদর্শে। সেই রাষ্ট্র গঠনের জন্য প্রয়োজন শিক্ষিত মা এবং আল্লাহর নামে পরিচালিত শিক্ষা।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যেক মানুষ দ্বীনের ছায়াতলে আসুক। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া এ কাজ সম্ভব নয়।” তিনি সংগঠনের প্রতিটি স্তরের দায়িত্বশীলদের উদ্দেশে বলেন, “বুঝে-শুনে জনশক্তিকে পরিচালনা করতে হবে। অপরাধ হলে বিচার হবে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী।” একইসঙ্গে তিনি ব্যক্তিগত সতর্কতা ও সংগঠনের সমষ্টিগত তদারকির কথা তুলে ধরেন।
ডা. শফিক বলেন, শহীদ নেতাদের রক্ত, মজলুমদের চোখের পানি এবং ত্যাগী নেতাকর্মীদের কোরবানির ফলে জনগণের আস্থা ও ভালোবাসা জামায়াতের প্রতি বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, কুরআন, হাদীস ও বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞান চর্চার পাশাপাশি পারিবারিক সম্পর্কের দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে।
শিবিরে আলোচনা করেন মাওলানা আবদুল হালিম (Mawlana Abdul Halim), যিনি দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক। তিনি বলেন, “আচরণে পরিচ্ছন্নতা এবং উত্তম ব্যবহার নেতৃত্বকে গ্রহণযোগ্য করে তোলে। সংগঠনের শক্তি বাড়াতে হলে ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।”
অন্যদিকে, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান (Mawlana Muhammad Shahjahan) বলেন, “জনশক্তির প্রতিটি কর্মকাণ্ড আখিরাতমুখী হওয়া উচিত। ইউনিট সংগঠনই হচ্ছে ভিত্তি—এখান থেকেই সংগঠনের মজবুতি ও জনসমর্থনের সূত্রপাত ঘটে।”
শিবিরটি পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ এবং রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের বর্তমান ও সাবেক জেলা আমিররা।
পুরো আয়োজনজুড়ে ছিল এক ধরনের আত্মবিশ্লেষণ, আদর্শ প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা এবং ইসলামী নেতৃত্বের পুণর্গঠনের আহ্বান। বক্তারা বারবার দ্বীনি শিক্ষা, নৈতিকতা, এবং সংগঠনের দায়বদ্ধতা বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন।