বিএনপিকে আবার আলোচনায় ডাকলো অন্তর্বর্তী সরকার, ফলপ্রসূ হবে কি?

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে উত্তপ্ত রাজনৈতিক আবহে আবারও আলোচনার টেবিলে বসার ডাক পেল বিএনপি (BNP)। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus) আগামী ২ জুন দ্বিতীয় দফার আলোচনার জন্য বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আজ শনিবার রাজধানীতে এক আলোচনাসভায় এ তথ্য জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

সালাহউদ্দিন বলেন, “সরকার একের পর এক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার আনুষ্ঠানিকতা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে কোনো গঠনমূলক অগ্রগতি নেই। আলোচনা চলছে, কিন্তু সমাধানের পথে কোনও কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।” তিনি মন্তব্য করেন, কেবল আলোচনা করে নয়, বরং বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমেই জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

আলোচনার এই উদ্যোগকে সালাহউদ্দিন রাজনৈতিক আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে দেখলেও, সংবিধান সংস্কার ইস্যুতে তার বক্তব্য ছিল অনেক বেশি সতর্ক। তিনি বলেন, “সংবিধান সংস্কার কমিশন যদি নিজেদের খেয়ালে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করে, তবে তা জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। সংবিধান গণতন্ত্রের ভিত্তি—জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হলে তা হবে আরেকটি বাকশালের প্রতিচ্ছবি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিশ্বাস করি। মতের পার্থক্য থাকবেই, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে কোনও যুক্তি নেই। দেশের জনগণ চায় অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন।”

এই প্রেক্ষাপটে তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যদি ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা থাকে, তাহলে তা জাতির সামনে উপস্থাপন করা হোক।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের পুনরায় আলোচনার আমন্ত্রণ কৌশলগত হলেও এর বাস্তবিক প্রভাব অনেকটাই নির্ভর করবে বিএনপির প্রতিক্রিয়া ও আলোচনায় তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণের ওপর। যদিও সালাহউদ্দিনের বক্তব্যে হতাশার সুর স্পষ্ট, তারপরও এই ডাকে সাড়া দিলে আগামী দিনের রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানের পথে একটি সম্ভাব্য জানালা খুলে যেতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *