রাজধানীর উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের কাঁচাবাজারসংলগ্ন মাঠে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান (Ziaur Rahman)-এর ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত দরিদ্রদের মধ্যে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শাহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী (Shahid Uddin Chowdhury Annie)।
শনিবার (৩১ মে) দুপুরের সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ড. ইউনূসের মতো একজন নোবেল বিজয়ীর আমলে দুর্নীতির অভিযোগ উঠবে, এটা আমরা কেউ কল্পনাও করিনি।’ তাঁর কণ্ঠে তীব্র হতাশা আর বিস্ময়ের সুর ছিল স্পষ্ট।
আয়োজিত এ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি (Dhaka North City BNP)-র অধীন উত্তরা পশ্চিম থানা ও ডিএনসিসির ৫১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি। সভার সভাপতিত্ব করেন মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আফাজ উদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মো. আমিনুল হক ও যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেনসহ অন্যান্য নেতারা।
এ্যানী আরও বলেন, ‘এই দুর্নীতির পেছনে দায়ী হচ্ছে অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসীন সরকার। দেশের মানুষ এই শাসনের অধীনে কোনো স্বস্তিতে নেই। দুর্নীতি, দমন-পীড়ন আর ভোটহীনতার এই দুঃসময় দ্রুত শেষ করতে হলে, আমাদের দরকার অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন।’
তিনি বলেন, ‘বিগত ১৭ বছরে দেশের জনগণ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। পাশের দেশের প্রেসক্রিপশনে তিনটি প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে। মানুষ এবার গণতন্ত্রের স্বাদ পেতে চায়। তাই ডিসেম্বরেই জাতীয় নির্বাচন চাই দেশের সব দলের।’
তবে অনুষ্ঠান শুরুর আগ মুহূর্তে ঘটে এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা। বিএনপির স্থানীয় দুই গ্রুপের মধ্যে শুরু হয় উত্তেজনা। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে পরিস্থিতি চরমে ওঠে— পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হন, যদিও কারও অবস্থা গুরুতর নয় বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এ্যানী বলেন, ‘বিগত ১৭ বছরে আমরা আওয়ামী লীগের হামলা-নির্যাতন সহ্য করেছি। কিন্তু আজ নিজেদের নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে নিজেরাই মারামারিতে জড়াচ্ছেন— এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই আচরণে সরকারপন্থীরা অস্থিরতা ছড়ানোর সুযোগ পাবে।’
তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, ‘তারেক রহমান (Tarique Rahman) আমাদের সব কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করছেন। যারা অহেতুক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, তারা রেহাই পাবে না। ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে দোষীদের দলীয় জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।’
সবশেষে আট শতাধিক দরিদ্র নারী-পুরুষের মধ্যে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করা হয়।