জাতীয় নির্বাচন নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই হবে, তবে তা ডিসেম্বরেও হতে পারে, আবার জুনেও—এমনটাই জানালেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম (Shafiqul Alam)। নির্বাচন নিয়ে চলমান জল্পনা-কল্পনার মধ্যে রোববার (১ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “নির্বাচন আগেও হতে পারে, তবে ৩০ জুনের পরে যাবে না। ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল, মে কিংবা জুন—সবই সম্ভব, কিন্তু ৩০ জুনই শেষ সময়সীমা।”
এর আগে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus) ঘোষণা দেন, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার এই ঘোষণাকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিশেষত, বিএনপি (BNP)-র পক্ষ থেকে অনেক নেতাই ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের দাবি তুলেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রেস উইংয়ের অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে মূলত প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন জাপান সফর (Japan Visit) নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। একইসঙ্গে জাতীয় নির্বাচন ও রাজনৈতিক সংলাপ নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন কর্মকর্তারা।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপ–প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার (Mohammad Abul Kalam Azad Majumder) জানান, আগামীকাল সোমবার (২ জুন) বিকেল চারটায় প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বহুল প্রতীক্ষিত সংলাপের উদ্বোধন করবেন। তিনি আরও বলেন, “সংস্কার প্রক্রিয়ায় যারা যুক্ত, তাদের সবাইকে আলোচনায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।”
আলোচনার লক্ষ্য হচ্ছে—সংস্কার নিয়ে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ শেষ করে জুলাইয়ের ‘চার্টার অব কনসেন্সাস’ নামে পরিচিত রাজনৈতিক রূপরেখা নিয়ে একটি সুস্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া। আবুল কালাম আজাদ বলেন, “এই সংলাপ খুব দ্রুতই শেষ হবে বলে আমরা আশা করি, আর এরপরেই চার্টার নিয়ে সবাইকে পরিষ্কার বার্তা দেওয়া যাবে।”
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ (Fayez Ahmad) উপস্থিত ছিলেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নে দিকনির্দেশনামূলক মন্তব্য করেন।
সার্বিকভাবে নির্বাচন ও সংলাপকে ঘিরে যে গতি তৈরি হয়েছে, তাতে দেশের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার খাত খুলছে। তবে ডিসেম্বরেই নির্বাচন চেয়ে বিএনপির চাপ, আর প্রধান উপদেষ্টার সময়কালকে ৩০ জুন পর্যন্ত খুলে রাখার অবস্থান—এই দুটি সুর কীভাবে মিলবে, তা নিয়েই এখন রাজনৈতিক মহলে আগ্রহ তুঙ্গে।