‘চা-নাশতা খাওয়ানোর সংলাপ করবেন না’—এই কড়া মন্তব্যে আজ অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন মো. রাশেদ খান (Md. Rashed Khan)। বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরে আয়োজিত গণঅধিকার পরিষদ (Gono Odhikar Parishad) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
সমাবেশে রাশেদ খান সরাসরি বলেন, ‘সংলাপ করবেন, কিন্তু চা-নাশতার মোড়কে যদি সময়ক্ষেপণ করেন, তাহলে জনগণকে ধোঁকা দেওয়া হবে। সংলাপ ফলপ্রসূ করতে হলে আপনাদের সিদ্ধান্ত জানাতে হবে।’
তিনি সরকারকে তিনটি বিষয়ে স্পষ্ট রোডম্যাপ প্রকাশের আহ্বান জানান—বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন। তার ভাষায়, ‘বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন একে অপরের পরিপূরক। এর কোনোটিকে বাদ দিয়ে অথবা একে অপরের মুখোমুখি করে বিভ্রান্তি তৈরি করা চলবে না।’ তিনি সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা এবং ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানান।
সমাবেশের পটভূমিতে ছিল বরিশালে গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর জাতীয় পার্টির হামলা এবং জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। এই ঘটনার প্রতিবাদেই দলটি আজকের কর্মসূচি গ্রহণ করে। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেন দলের নেতা-কর্মীরা।
রাশেদ খান আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)-এর বিচার দাবি করলে জি এম কাদের (GM Quader)-এর বিচারও দাবি করতেই হবে। আওয়ামী লীগের মতো জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করতে হবে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জি এম কাদেরকে গ্রেপ্তার না করলে দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু হবে।’
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘জি এম কাদেরের নামে মামলা থাকার পরও তাঁকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না কেন? সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ বা কোনো গোষ্ঠী কি জাতীয় পার্টিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে? অন্যথায় তাদের কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে না কেন? তাদের মিছিল-মিটিংয়ে বাধা দেওয়া হচ্ছে না কেন? এমনকি আওয়ামী লীগ পর্যন্ত তাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে।’
বরিশালে দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে, নইলে যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে, তা আর নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে না। এর দায়দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।’
এদিকে, সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান (Faruk Hasan) বলেন, ‘জাতীয় পার্টি হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রধান দোসর। সরকারের তিন উপদেষ্টা—আদিলুর রহমান, রিজওয়ানা হাসান ও মাহফুজ আলম—এই দলে পৃষ্ঠপোষকতা করছেন। তারা চায়, জাতীয় পার্টিকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগকে পুনরায় প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে।’
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আজ থেকেই জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধ—এই ঘোষণা আমরা দিচ্ছি। যেখানেই তাদের পাওয়া যাবে, প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য হাসান আল মামুন (Hasan Al Mamun), আবু হানিফ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীন এবং যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন।