সাহাবুদ্দিন তিন মাসে নির্বাচন করলেন, আপনি কেন নয় মাসেও পারছেন না—সরকারকে জয়নুল আবদিন ফারুকের প্রশ্ন

নির্বাচনের তারিখ ও রোডম্যাপ এখনো ঘোষণা না হওয়ায় প্রশ্ন তুলেছেন জয়নুল আবদিন ফারুক (Zainul Abedin Farroque)। সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদের (Shahabuddin Ahmed) নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেখানে মাত্র তিন মাসেই সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে পেরেছিল, সেখানে বর্তমান সরকার নয় মাসেও সেই রোডম্যাপ দিতে ব্যর্থ—এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন তিনি।

রবিবার (১ মে) নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ সাইনবোর্ড এলাকায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের (Ziaur Rahman) ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে মিতালী মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফারুক বলেন, “পাঁচ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে (Sheikh Hasina) বিদায় করে দেশের জনগণের গ্রহণযোগ্য একজন নেতাকে আমরা মসনদে বসিয়েছি। এখন সেই মসনদে বসে কেউ কেউ ছাড়তে চাইছেন না।”

তিনি অভিযোগ করেন, নয় মাস পার হয়ে গেলেও নির্বাচন নিয়ে কোনো তারিখ বা রোডম্যাপ নেই। ফলে ব্যবসায়ী, দোকানদার, সাধারণ মানুষের মনেও প্রশ্ন উঠছে—আপনাকে কি চিরস্থায়ী শাসনের জন্য ক্ষমতায় বসানো হয়েছে?

বিএনপির এই নেতা দাবি করেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরপরই নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বিএনপিকে ‘মাইনাস’ করার জন্য। তাই এখন বিভেদ ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে বলে মত দেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, “মানুষ আজ সন্দেহ করছে—আমার কথা নয়—পাঁচ আগস্টের পর একটি দলের নামে দল গঠন করে তাকে প্রতিষ্ঠিত করার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। এটা থামাতে হলে প্রধান উপদেষ্টাকে দায়িত্ব নিতে হবে। নির্বাচনকে আর প্রলম্বিত করার সুযোগ নেই। ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে এবং জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।”

ফারুক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আপনারা করিডোর দিবেন, চট্টগ্রাম বন্দর দিবেন—এসব বাংলাদেশের মানুষ মানবে না। আপনাদের করণীয় হলো নির্বাচন ও আইন সংস্কার, সেই কাজ করুন।”

এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা ও মিতালী মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমির হোসেন বাদশা, ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোক্তার হোসেন, দোকানদার সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ শিপন, সমাজসেবক হাজী কমর আলী মাতুব্বর প্রমুখ।

নারায়ণগঞ্জের রাজনীতির প্রসঙ্গ টেনে ফারুক বলেন, “শামীম ওসমান (Shamim Osman) বলেছিলেন—‘আসুন খেলি। খেলার মাঠ খালি।’ আমরা এগারো জন মাঠে প্রস্তুত ছিলাম, কিন্তু তুমি তো ছিলে না। খেলতে আসো। এখন তো নিরপেক্ষ রেফারি মাঠে আছে। তখন খেলেছ পুলিশ আর অস্ত্রের ওপর ভর করে।”

তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনা পালিয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের গডফাদার শামীম ওসমানও পালিয়েছে। সাইনবোর্ড এলাকায় আমার নেত্রীকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। সেটিই ছিল তাদের ‘খেলা’।”

ফারুকের এই বক্তব্যে স্পষ্ট, সরকারকে চাপের মুখে ফেলতে এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে বিএনপি নতুন কৌশল নিচ্ছে। নির্বাচনের দেরি ও সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফের মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠতে চাচ্ছে তারা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *