নরসিংদীতে রাইড শেয়ারের এক নারী যাত্রীকে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত মোটরসাইকেলচালক শাহ পরান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। রোববার (১ জুন) নরসিংদীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেশকাত ইসলামের আদালতে হাজির করা হলে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করেন।
পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী নারী গত ২৮ মে বিকেলে মিরপুর ১২ নম্বর এলাকা থেকে রাজধানীর শ্যামলীতে যাওয়ার জন্য একটি রাইড শেয়ার মোটরসাইকেলে ওঠেন। চালক শাহ পরান তাকে গন্তব্যে না পৌঁছে নিয়ে যান নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌরসভার পাঁচদোনা-টঙ্গী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে একটি নির্জন এলাকায়। রাত প্রায় সোয়া ৯টার দিকে সেখানেই ভয়ংকর ঘটনা ঘটে—শাহ পরান ওই নারীকে ধর্ষণ করেন।
তবে এখানেই থেমে থাকেনি বর্বরতা। নারীটির সঙ্গে থাকা নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি তাকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে বিকাশের মাধ্যমে তার স্বজনদের কাছ থেকেও অর্থ আদায় করেন চালক। এরপরই ভুক্তভোগী নারী ৯৯৯-এ কল করলে তাৎক্ষণিকভাবে পলাশ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, অভিযুক্ত শাহ পরান ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানার তারানগর বটতলী (দক্ষিণ পাড়া) এলাকার বাসিন্দা। তার বাবার নাম আব্দুল আলী। ঘটনাটির পরদিন, অর্থাৎ ২৯ মে, ওই নারী পলাশ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় শাহ পরানকে প্রধান আসামি হিসেবে এবং তার সঙ্গে সহায়তা করা অজ্ঞাতনামা আরও দুজনকে অভিযুক্ত করা হয়।
মামলার পর পুলিশের একাধিক ইউনিট—থানা, গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা সাঁড়াশি অভিযান চালায় আসামিদের ধরতে। অবশেষে গত শনিবার (৩১ মে) মধ্যরাতে শাহ পরানকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পলাশ থানা পুলিশ।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন ঘটনার বিষয়ে নিশ্চিত করে বলেন, অভিযুক্তকে আদালতে পাঠানোর পর সে স্বেচ্ছায় ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।
ভুক্তভোগী নারী বর্তমানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন এবং পুরো ঘটনার তদন্ত করছে নরসিংদী জেলা পুলিশ।