আজ বাজেট ঘোষণা : বাড়তে-কমতে পারে যেসব পণ্যের দাম

আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট আগামী ২ জুন জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ (Dr. Salehuddin Ahmed)। ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেটে একাধিক খাতে কর বাড়ানো ও কর ছাড়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যার ফলে অনেক পণ্যের দাম বাড়বে আবার কিছু কমবে।

যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে

বাজেটে প্লাস্টিক জাতীয় হোম ও কিচেন ওয়্যারের ভ্যাট দ্বিগুণ করে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব আসতে পারে। হেলিকপ্টার আমদানির ওপর শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে হেলিকপ্টার যাত্রার খরচ বাড়বে।

কনভেনশন হল ও কনফারেন্স সেন্টারের সেবায় উৎসে কর ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব থাকায় বিয়েসহ বিভিন্ন সামাজিক আয়োজনে খরচ বাড়বে।

একাধিক গাড়ির ক্ষেত্রে বর্তমানে ২৫ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত পরিবেশ সারচার্জ আরোপ করা হয়। এবার তা বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার ও এসির ওপর ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করার কথা ভাবছে সরকার। মোবাইল ফোনের উপকরণে ভ্যাট ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪ শতাংশ করা হতে পারে। এলপিজি সিলিন্ডারের ওপর ভ্যাটহার ১০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।

বাড়ির নির্মাণ খরচ বাড়তে পারে। সিমেন্ট শিট উৎপাদনে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ, ফেরো ম্যাঙ্গানিজ, ফেরো সিলিকো ম্যাঙ্গানিজ অ্যালয় উৎপাদনে টনপ্রতি ভ্যাট ১ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১২০০ টাকা এবং ফেরো সিলিকন অ্যালয় উৎপাদনে ১২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫০০ টাকা করার প্রস্তাব রয়েছে।

ক্রেডিট রেটিং এজেন্সির সেবায় ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ, লিফট উৎপাদনে ও নির্মাণ সংস্থার সেবায় ভ্যাট যথাক্রমে সাড়ে ৭ শতাংশ ও ১০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে।

পূর্বে ভ্যাটমুক্ত ব্লেন্ডার, মিক্সার, রাইস কুকারসহ গৃহস্থালি ইলেকট্রিক পণ্যে এবার ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের সম্ভাবনা রয়েছে।

ফোর স্ট্রোক থ্রি হুইলারে ভ্যাট বাড়িয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ এবং কটন সুতা, কৃত্রিম আঁশ ও সংমিশ্রণে তৈরি ইয়ার্ন উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট বাড়ানো হতে পারে।

যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে

স্থানীয় ঋণপত্রের কমিশনের উৎসে কর অর্ধেকে নামিয়ে আনায় চাল, ডাল, লবণ, ভোজ্যতেলসহ একাধিক নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমতে পারে।

১৬ থেকে ৪০ আসনের যাত্রীবাহী বাসের জন্য আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হতে পারে, ফলে যাত্রী পরিবহন খরচ কমবে।

পরিবেশবান্ধব পণ্য যেমন সুপারির খোল দিয়ে তৈরি জিনিস ও হাতে তৈরি মাটির পণ্যে ১৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতির প্রস্তাব রয়েছে।

কম্পিউটার ও এর যন্ত্রাংশ, ফলের ক্রয়ে উৎসে কর ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.৫০ শতাংশ করার প্রস্তাব আসছে।

এলএনজি আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ২ শতাংশ অগ্রিম কর অব্যাহতির ফলে বিদ্যুৎ, শিল্প উৎপাদন ও পরিবহন খাতে খরচ কমবে।

স্যানিটারি ন্যাপকিন, প্যাকেটজাত তরল দুধ, পলিপ্রোপাইলিন স্ট্যাপল ফাইবারসহ বিভিন্ন পণ্যে ভ্যাট অব্যাহতির প্রস্তাব থাকছে। ই-বাইকের উৎপাদন ও উপকরণ আমদানি, এসি ও ফ্রিজের কম্প্রেসর উৎপাদনের উপকরণ আমদানিতে ভ্যাট ছাড় দেওয়া হতে পারে।

ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী, বিদেশি ক্রেতার এজেন্টের কমিশন এবং জমি-ফ্ল্যাট বেচাকেনায় নিবন্ধন ও উৎসে কর কমানোর প্রস্তাবও বাজেটে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।

রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা কমানো হচ্ছে—বর্তমানে ৩৯ সেবায় বাধ্যবাধকতা থাকলেও নতুন বাজেটে ১২টি সেবায় কেবল টিআইএন দিলেই চলবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *