নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus)-কে উদ্দেশ করে কটাক্ষ করেছেন আন্দালিব রহমান পার্থ (Andaleeve Rahman Partho)। পলিটিকস আর ইকোনমিকস এক নয়—এই বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, “পলিটিকসে দুই আর দুইয়ে ২২ হয়, কিন্তু ইকোনমিকসে দুই আর দুইয়ে ৪ হয়।” মঙ্গলবার (৩ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গণ অধিকার পরিষদ (Gono Adhikar Parishad) আয়োজিত ‘গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
আলোচনার এক পর্যায়ে পার্থ বলেন, “অনেকে বলেন—আপনারা ডিসেম্বরে নির্বাচন চান। কিন্তু আমরা তো বলিনি ডিসেম্বরে নির্বাচন চাই। সেই কথা বলেছেন আপনি, ইউনূস সাহেব। আমরা বলেছি, আপনি যে ওয়াদা দিয়েছেন ডিসেম্বরে নির্বাচনের, সেটি রাখেন। আমাদের মুখে ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা আসেনি।”
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (Bangladesh Jatiya Party) চেয়ারম্যান আরও বলেন, “আপনার ক্ষমতার উৎস জনগণ। যেহেতু এখন সংসদ নেই, আপনার ক্ষমতার উৎস হচ্ছে আমরা—রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজ ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায়। আপনি আজ সংস্কারের কথা বলছেন, কিন্তু সাধারণ মানুষ কী চায়, তাদের সংস্কারের কোনো প্রস্তাব তো আপনি দিচ্ছেন না।”
দেশের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সমালোচনা করে পার্থ বলেন, “বাংলাদেশে এখন দুই লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছে, এই বিষয় নিয়ে তো কোনো সংস্কারের কথা শোনা যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা আজ হাহাকার করছে, এনবিআরের করের চাপ এবং তথাকথিত সংস্কার দিয়ে তাদের শেষ করে ফেলা হচ্ছে। গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু তারা কথা বলার মতো কোনো জায়গা পাচ্ছে না।”
রাজনীতি এবং অর্থনীতির পার্থক্য তুলে ধরে তিনি আবার বলেন, “আমি আগেও বলেছি, পলিটিকস আর ইকোনমিকস এক না। পলিটিকসে দুই আর দুইয়ে ২২ হয়, ইকোনমিকসে দুই আর দুইয়ে ৪ হয়।”
নির্বাচনকেই দেশের সবচেয়ে বড় সংস্কার হিসেবে উল্লেখ করে পার্থ বলেন, “নির্বাচন দিলে সব সমস্যার সমাধান হবে না, আবার সব কিছুর ইতি টানাও হবে না। কিন্তু নির্বাচনই হলো জনগণকে ক্ষমতায়িত করার একমাত্র উপায়। বাকী সব সংস্কার সময়ের ব্যাপার। নির্বাচনের মাধ্যমেই মানুষের ক্ষমতা তাদের হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে।”
অনুষ্ঠানে আরও অংশ নেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, যারা সকলে মিলেই দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে নির্বাচনের অনিবার্যতা এবং রাষ্ট্রীয় সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।