“আওয়ামী লীগের পথে হাঁটলে ইতিহাস ক্ষমা করবে না” — ঝিনাইদহে হুঁশিয়ারি অ্যাটর্নি জেনারেলের

আওয়ামী লীগের ‘ফ্যাসিস্ট’ শাসন, গুম-খুনের রাজনীতি ও জনগণকে স্তব্ধ করে দেওয়ার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, “আবার যদি কেউ আওয়ামী লীগের পথে হাঁটে, তবে ইতিহাস তাদেরও ক্ষমা করবে না।”

বুধবার (৪ জুন) বেলা ১১টায় ঝিনাইদহের জোহান ড্রিম ভ্যালি পার্ক অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এক স্মৃতিচারণ ও ঈদসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব বলেন তিনি। ‘দ্য হিরোস অব ঝিনাইদহ’ শিরোনামে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ২৪ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের স্মরণ করা হয়।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “জুলাই বিপ্লবের চেতনা হলো বৈষম্যহীন সমাজ ও ন্যায়বিচারের সংগ্রাম। আওয়ামী লীগ এই চেতনার ঠিক বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে। তারা গুম, খুন, মামলা, টেন্ডারবাজি আর ভোট লুটের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, ২০০৮ সালের পর আওয়ামী লীগের শাসনামলে প্রায় ৭০০ জন নিখোঁজ হয়েছে, ৪ হাজার ৫০০ মানুষ বিনা বিচারে হত্যা হয়েছে, এবং প্রায় ৬০ লাখ মানুষ গায়েবি মামলার শিকার হয়েছে।

তার ভাষায়, “আজ সেই আওয়ামী লীগ দেশ ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। যারা আবারও সেই পথে হাঁটবেন, তাদের প্রতি ইতিহাস নির্মম হবে।”

আসাদুজ্জামান আরও বলেন, “এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে কোনো গুমের ঘটনা ঘটেনি, পুলিশ বাদী হয়ে কোনো গায়েবি মামলাও হয়নি।” তিনি দৃঢ় কণ্ঠে ঘোষণা করেন, “জুলাই বিপ্লব মানে একটি ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের সংকল্প।”

অনুষ্ঠানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঐক্যের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “ছাত্রদের রক্তে স্নাত এই বিপ্লব যদি ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে বিভেদে পতিত হয়, তাহলে সেই বিপ্লব ব্যর্থ হবে। একে অপরের প্রতি অসহিষ্ণু আচরণ, অশ্রদ্ধা ও উসকানিমূলক বক্তব্য ঐক্য বিনষ্ট করতে পারে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রিফাত রশিদ (Rifat Rashid), বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক। সঞ্চালনায় ছিলেন ঝিনাইদহ শাখার সদস্য সচিব সাইদুর রহমান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএ মজিদ, গণঅধিকার পরিষদের জেলা সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন, ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি এইচএম মোমতাজুল করিম, জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির, ঝিনাইদহ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন এবং সদর হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. মো. মনিরুল ইসলাম।

এছাড়াও, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক, ছাত্র, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যাপক উপস্থিতি জানান।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *