বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া (Begum Khaleda Zia)-র সঙ্গে হঠাৎ সাক্ষাৎ করেছেন সরকারের তিন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি—শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান (Adilur Rahman Khan), গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম এবং রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম।
বুধবার (৪ জুন) রাত প্রায় পৌনে ৯টার দিকে তারা খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় উপস্থিত হন। সেখানে কিছু সময় অবস্থান করে তারা বিএনপি প্রধানের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং আগত ঈদুল আজহা উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানান।
এই সাক্ষাৎ এমন এক সময়ে ঘটল, যখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন শান্ত মনে হলেও অন্তঃস্রোতে নানা গুঞ্জন প্রবাহিত হচ্ছে। এ নিয়ে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান (Shayrul Kabir Khan) সাংবাদিকদের জানান, “তারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।” তবে কেন এই তিনজন একসঙ্গে গিয়েছেন বা আলোচনার বিষয়বস্তু কী ছিল—সেই বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার সাংবাদিকদের জানান, “উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানসহ কয়েকজন কর্মকর্তা এসেছিলেন, ছিলেন প্রায় আধা ঘণ্টা। এটি মূলত সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ ছিল। কিছু কাগজ হস্তান্তর করেছেন, তবে তা কী ধরনের—এ বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই।”
তবে সরকারি সূত্রগুলো জানায়, বাড়িটি দীর্ঘদিন ধরে খালেদা জিয়ার ব্যবহারে থাকলেও আইনি প্রক্রিয়ায় নামজারি হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর বিষয়টি নিষ্পন্ন করে মালিকানা দলিল তাঁর নামে সম্পন্ন করা হয় এবং বুধবার তা আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হলো।
গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে আরও জানানো হয়েছে, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় কাগজ হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় কিছু বিলম্ব হয়েছে। তবে উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বাসভবনে গিয়েই তা হস্তান্তর করেন।
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর ১৯৮১ সালের ৩১ মে, সরকার খালেদা জিয়াকে গুলশানে দেড় বিঘা জমির ওপর এই বাড়ি বরাদ্দ দেয়। বাড়িটি ‘ফিরোজা’ নামে পরিচিত তাঁর আরেকটি বাসভবনের কাছাকাছি অবস্থিত।
এই নামজারি কার্যক্রমকে রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও মানবিক দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা, যদিও এ নিয়ে বিএনপি বা সরকার আনুষ্ঠানিক কোনো রাজনৈতিক মন্তব্য করেনি। তার সঙ্গে সরকারি পর্যায়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের এমন ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কৌতূহলী করে তুলেছে। যদিও এ বিষয়ে কারও পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি, তবুও অনেকের প্রশ্ন—এটি কি নিছকই সৌজন্য সাক্ষাৎ, নাকি ভেতরে আরও কিছু আছে?