রাতভর ২ কোটি টাকার ভারতীয় শাড়ীর ট্রাক আটকে রেখে পুলিশে দিলো বিএনপি নেতারা

নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় প্রায় দুই কোটি টাকার ভারতীয় শাড়ি ভর্তি একটি ট্রাক আটক করে তা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন স্থানীয় বিএনপি (BNP) নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ভোররাতে উপজেলার আসমা ইউনিয়নের কৈলাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে ট্রাকটি জব্দ করা হয়।

বারহাট্টা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ কামরুল হাসান (Mohammad Kamrul Hasan) গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “খবর পেয়ে ভোরে ট্রাকটি আটক করে থানায় আনা হয়েছে। শাড়িগুলোসহ ট্রাক এখন পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া চলমান।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চিরাম ইউনিয়নের নৈহটী বাজার এলাকা থেকে ভারতীয় শাড়ি বোঝাই করে একটি ট্রাক বারহাট্টার দিকে যাচ্ছিল—এমন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা সড়কে অবস্থান নেন। এরপর রাত আনুমানিক ৩টার দিকে কৈলাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে তারা ট্রাকটিকে আটকে ফেলেন এবং পুলিশের খবর দেন।

এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন আসমা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মতিউর রহমান, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী তালুকদারের ছেলে মিজানুর সেলিম, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সাজরুল ইসলাম সাজু, যুবদলের রঞ্জু, শাহীন এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের চন্দনসহ আরও অনেকে।

মতিউর রহমান বলেন, “বিভিন্ন সূত্রে খবর পেয়ে আমরা রাতে সড়কে পাহারা বসাই। সন্দেহভাজন ট্রাকটি আটকের পর তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের জানানো হয় এবং পরে পুলিশকে খবর দিয়ে তাদের হাতে মালামাল তুলে দেওয়া হয়।”

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আশিক আহমেদ কমল বলেন, “বিএনপি কখনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। চোরাচালান যেই করুক না কেন, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”

উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোন্তাক আহমদ জানান, খবর পাওয়ার পর তিনি বারবার থানার ওসিকে ফোন দেন এবং অবশেষে ওসি ফোন রিসিভ করলে ঘটনার বিস্তারিত জানান। তিনি বলেন, “আমরা পুলিশকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করেছি এবং স্পষ্ট করে দিয়েছি—বিএনপি এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার।”

এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, চোরাকারবারিরা দীর্ঘদিন ধরে পুটাকিয়া-নৈহাটি-বারহাট্টা সড়কটি ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্য পাচার করছিল। পুটাকিয়া গ্রামের ভৌগোলিক অবস্থান—নেত্রকোনার বারহাট্টা, কলমাকান্দা এবং সুনামগঞ্জ জেলার ধরমপাশার সংযোগস্থলে হওয়ায়, এটি চোরাকারবারিদের একটি ‘সেফ রুট’ হয়ে উঠেছিল।

বারহাট্টা থানার ওসি মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, ট্রাক ও মালামালের তালিকা প্রণয়ন চলছে। তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর শাড়িগুলোর প্রকৃত মূল্য নির্ধারণ করা সম্ভব হবে। তিনি আরও জানান, ঘটনাটি তদন্তাধীন এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *