পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে গরু ও কোরবানির চামড়া চোরাচালান ঠেকাতে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর কড়া নজরদারির ব্যবস্থা নিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (BGB)। হবিগঞ্জ সীমান্তে সিসিটিভি ক্যামেরা ও ড্রোন ব্যবহার করে টহল পরিচালনার পাশাপাশি গোপন তথ্যভিত্তিক অভিযানও চালানো হচ্ছে।
শুক্রবার (৬ জুন) দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন ৫৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানজিলুর রহমান। তিনি বলেন, “দেশে কোরবানির পশুর কোনো ঘাটতি নেই। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, পশুর চাহিদা যেখানে এক কোটি, সেখানে উৎপাদন হয়েছে প্রায় দুই কোটি পশু।” শুধু হবিগঞ্জেই পারিবারিক পর্যায়ে লালন-পালন করা হয়েছে ৭৫ হাজার গবাদি পশু, যেখানে স্থানীয় চাহিদা ৭০ হাজারের মতো।
তানজিলুর রহমান আরও বলেন, “এই প্রেক্ষাপটে পশু চোরাচালান একদিকে যেমন অযৌক্তিক, অন্যদিকে এটি দেশের অর্থনীতির জন্য হুমকি। দেশীয় খামারিদের স্বার্থ রক্ষা এবং বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।”
৫৫ বিজিবির অধিনায়ক জানান, পশু চোরাচালানের পাশাপাশি চামড়া পাচার ঠেকাতেও বিজিবি প্রস্তুত রয়েছে। ঈদের পর যাতে চামড়া বিদেশে পাচার না হয়, সে জন্য এখন থেকেই তৎপর রয়েছে বিজিবির বিশেষ টহল দল। সীমান্তে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং পুশইন রোধেও বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। বিজিবি জানিয়েছে, ঈদের জামাত শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৬ জুন পর্যন্ত হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন পরিচালিত চোরাচালানবিরোধী অভিযানে প্রায় ১৭ কোটি ৪০ লাখ টাকার ভারতীয় পণ্য, মাদক এবং যানবাহন জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে রয়েছে ফেনসিডিল, গাঁজা, মোটরসাইকেল এবং ভারতীয় কাপড়।
বিজিবির দাবি, সীমান্তে কড়া নজরদারির ফলেই এসব চোরাচালান প্রতিরোধ সম্ভব হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে, যা ভবিষ্যতেও কার্যকর থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন অধিনায়ক তানজিলুর রহমান।