আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৭ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ৭ জুন পর্যন্ত ১০ মাসে বিএনপি নেতাদের হাতে ১২৩ জন খুন হয়েছে—এমন অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কয়েকজন নেতা। তবে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই অভিযোগের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছেন।
মঙ্গলবার সকালে তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে ওই সময়কালে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হত্যাকাণ্ডের খবরের বিশ্লেষণ তুলে ধরেন, যা যুক্তরাজ্যভিত্তিক পত্রিকা বাংলা আউটলুকের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত ১০ মাসে ১২৩ হত্যাকাণ্ড নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, অন্তত ২১টি ঘটনায় বিতর্কিতভাবে বিএনপির নাম এসেছে। এছাড়া, হত্যাকাণ্ডের খবরগুলোতে দেখা গেছে, দলীয় পরিচয়ের চেয়ে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, আধিপত্য বিস্তার, লেনদেন সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব ও এলাকাভিত্তিক দ্বন্দ্বের কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা সরাসরি রাজনৈতিক স্বার্থে বা দলীয় কারণে খুন করেছেন—এমন তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে উল্লেখ করা হয়নি; শুধুমাত্র রাজনৈতিক পরিচয় উঠে এসেছে।
বিএনপি মহাসচিবের পোস্টটি তুলে ধরা হলো—
‘ফেসবুক পোস্টে মির্জা ফখরুলের ভিন্নমত পোষণ গত ১০ মাসে সারা দেশে ১২৩ খুন হয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৭ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ৭ জুন পর্যন্ত এসব খুন হয়েছে এবং বিএনপি নেতাদের হাতেই তারা নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কয়েকজন নেতা।’
‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই নিয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণাও চলতে দেখা গেছে। এনসিপি নেতাদের দাবি, বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে গণমাধ্যমে ৭ আগস্ট থেকে ৭ জুন পর্যন্ত প্রকাশিত হত্যাকাণ্ডের খবর বাংলা আউটলুক বিশ্লেষণ করে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক একজন গবেষক ও সাংবাদিকের সহায়তায় করা এই বিশ্লেষণে বেরিয়ে আসে নতুন তথ্য।’
‘গত ১০ মাসে ১২৩ হত্যাকাণ্ড নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, অন্তত ২১টি ঘটনায় বিতর্কিতভাবে বিএনপির নাম এসেছে। এছাড়া, হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রকাশিত খবরগুলোতে দেখা গেছে, দলীয় পরিচয়ের চেয়ে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, আধিপত্য বিস্তার, লেনদেন সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব ও এলাকাভিত্তিক দ্বন্দ্বের কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা সরাসরি রাজনৈতিক স্বার্থে বা দলীয় কারণে খুন করেছেন—এমন তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়নি। শুধুমাত্র রাজনৈতিক পরিচয় উঠে এসেছে।’
‘যেভাবে হত্যার ঘটনাগুলো ঘটেছে, সেগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নিহতের ঘটনাগুলোর মধ্যে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ৪১ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া, আধিপত্য বিস্তার, ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ, চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ এবং ডাকাতি সংশ্লিষ্ট ঘটনায় এক পক্ষের হামলায় আরেক পক্ষের লোকজন নিহত হয়েছেন।’
নীচে মির্জা ফখরুলের শেয়ার করা আউটলুকের সেই খবরটি হুবহু তুলে ধরা হলো
গত ১০ মাসে সারা দেশে ১২৩ খুন হয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ৭ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ৭ জুন- এই ১০ মাসে এসব খুন হয় এবং বিএনপি নেতাদের হাতেই তারা নিহত হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কয়েকজন নেতা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই নিয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণাও চলতে দেখা গেছে। এনসিপি নেতাদের দাবি, বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকে এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে গণমাধ্যমে ৭ আগস্ট থেকে ৭ জুন পর্যন্ত প্রকাশিত হত্যাকাণ্ডের খবর বাংলা আউটলুক বিশ্লেষণ করে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক একজন গবেষক ও সাংবাদিকের সহায়তায় করা এই বিশ্লেষণে বেরিয়ে আসে নতুন তথ্য।
যেসব কারণে এই খুনাখুনি
গত ১০ মাসে ১২৩ হত্যাকাণ্ড নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, অন্তত ২১টি ঘটনা বিতর্কিতভাবে বিএনপির নাম এসেছে। এছাড়া হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রকাশিত খবরগুলোতে দেখা গেছে দলীয় পরিচয়ের চেয়ে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, আধিপত্য বিস্তার, লেনদেন সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব ও এলাকাভিত্তিক দ্বন্দ্বের কারণে ওইসব ঘটনা ঘটেছে। বিএনপির নেতা-কর্মীরা সরাসরি রাজনৈতিক স্বার্থে বা দলীয় কারণে কিংবা দলীয় পরিচয়ে খুন করেছেন এমন তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়নি। শুধু রাজনৈতিক পরিচয় উঠে এসেছে।
যেভাবে হত্যার ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নিহতের ঘটনাগুলোর মধ্যে দুই পক্ষের সংঘর্ষেই অন্তত ৪১ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আধিপত্য বিস্তার, ব্যবসার নিয়ন্ত্রন, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ, চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ, ডাকাতি সংশ্লিষ্ট ঘটনায় এক পক্ষের হামলায় আরেকপক্ষের লোকজন নিহত হয়েছেন।
তথ্যগত ভুল, বিভ্রান্তি
বিবিসি বাংলাসহ দেশের শীর্ষ গণমাধ্যমসহ একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরগুলো বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১২৩টি হত্যাকাণ্ডের খবরের মধ্যে অন্তত ২০টি খবর বিভ্রান্তিকর (মিসলিড) তথ্য দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে। ১৩টি সংবাদে তথ্যগত ভুল ছিল। এছাড়া ৫৯টি ঘটনার খবর তথ্যগত ঠিক ছিল।
বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদনগুলো হলো:
১. অলিউজ্জামান
ঘটনার প্রায় চার মাস পর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। স্থানীয় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত মিঠুন, আহসান ও সীমান্ত এই হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে সে সময় লোকমুখে শোনার কথা জানিয়েছিলেন অলিউজ্জামানের ভাতিজা আবু হানিফ। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মিঠুন দাবি করেছিলেন, আহসান ও সীমান্ত ঘটনাস্থলে ছিলেন না।
২. লয়লুছ মিয়া
সিলেটের বালাগঞ্জে আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে দা দিয়ে কোপানোর পর লয়লুছ মিয়া নামে এক যুবলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। এ বিষয়ে বালাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, সংঘর্ষের ঘটনাটি রাজনৈতিক নয়, এটি গোষ্ঠীকেন্দ্রিক দ্বন্দ্ব।
৩. মুহাম্মদ ইব্রাহিম
হঠাৎ একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তিনটি অটোরিকশায় এসে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁর মাথা ও বুক লক্ষ্য করে গুলি করতে থাকে। মুহাম্মদ রায়হান নামের একজন সন্ত্রাসীর নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে বলে তাঁরা প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
৪. আবদুল কাদের (মিলন)
কোম্পানীগঞ্জের চর পার্বতী ইউনিয়নের চৌধুরীরহাট এলাকা থেকে একটি মোটরসাইকেল তাঁদের পিছু নেয়। অটোরিকশা একই ইউনিয়নের পোলের গোড়া এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেলে থাকা আরোহীরা পথরোধ করেন। পরে তাঁর ভাইকে অটোরিকশা থেকে টেনেহিঁচড়ে নামান। সেখান থেকে মারতে মারতে পার্শ্ববর্তী এতিমখানার সামনে নিয়ে যান। সেখানে আরও কয়েকজন লোক তাঁর ভাইকে নির্মমভাবে পেটাতে থাকেন।
৫. তাজেল হাওলাদার
খোয়াজপুরে কীর্তিনাশা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিলেন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল সরদার। এ নিয়ে প্রতিবেশী শাহজাহান খান ও বালু ব্যবসায়ী হোসেন সরদারের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এর জের ধরে ৮ মার্চ নিহত হন তাজেল হাওলাদার।
৬. আবুল কাশেম
বেলা ১১টার দিকে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর কিছুটা দূরে সড়কে পৌঁছানোর পর ফাঁকা জায়গায় কাশেমকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে সন্ত্রাসীরা।
৭. মোহাম্মদ আলী
চাঁদা আদায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন বংশীকুণ্ডা উত্তর ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এরপর গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে হারুন মাহমুদের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫টি মোটরসাইকেলে ৪০ থেকে ৪৫ জন লোক দেশি অস্ত্র নিয়ে মহিষখলা বাজারে হামলা চালান।
৮. শান্তা ইসলাম
সোহেল ও তাঁর সমর্থকেরা দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজ মোর্শেদ খানের বাড়িঘরে হামলা চালান। এ সময় শান্তা বাধা দিলে তাঁকে গুলি করা হয়।
৯. এনামুল হক
পতিত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের লোকজন মো. ফরিদের ওপর হামলা চালিয়েছিলেন। পাল্টা হামলাও করেছিলেন ফরিদের লোকজন। দৃশ্যটি ভিডিও করতে গিয়ে এনামুল হামলার শিকার হন।
১০. আক্তার শিকদার ও মারুফ শিকদার
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মধ্যেরচর এলাকায় ফকির ও শিকদার বংশের লোকজনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর এলাকা ছাড়েন আওয়ামী লীগ নেতা আক্তার শিকদার। আজ ভোররাতে শরীয়তপুরের নতুনবাজার এলাকা দিয়ে আক্তার শিকদার তাঁর লোকজন নিয়ে মধ্যেরচর এলাকায় প্রবেশ করছেন, এমন খবর পেয়ে এলাকায় মাইকিং করে স্থানীয় লোকজনকে জড়ো করেন জলিল ফকিরের লোকজন। পরে আক্তার ও জলিলের লোকজন দেশী অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় বেশ কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। হাতবোমার আঘাতে ইউপি সদস্য আক্তার শিকদার ঘটনাস্থলেই নিহত হন। বোমায় গুরুতর আহত হন তাঁর ছেলে মারুফ শিকদার (২০)। শিকদারদের সঙ্গে ফকির বংশের লোকজনের দীর্ঘ বিরোধের কথা জানিয়ে মধ্যেরচর এলাকার বাসিন্দা রাজন হোসেন বলেন, ভোরে আক্তার শিকদার ও তাঁর দুই শতাধিক লোক প্রথমে জলিল ফকির, মোকলেস ফকির, মিজান আকন, শাহাবুদ্দিন ফকির, লাটু ব্যাপারী, বশার ব্যাপারী, আলী সরদারের বাড়িতে হামলা চালান। পরে তাঁরা একত্র হয়ে প্রতিরোধ গড়লে শিকদাররা পালান।
১২. সিরাজুল চৌকিদার
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মধ্যেরচর এলাকায় ফকির ও শিকদার বংশের লোকজনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর এলাকা ছাড়েন আওয়ামী লীগ নেতা আক্তার শিকদার। আজ ভোররাতে শরীয়তপুরের নতুনবাজার এলাকা দিয়ে আক্তার শিকদার তাঁর লোকজন নিয়ে মধ্যেরচর এলাকায় প্রবেশ করছেন, এমন খবর পেয়ে এলাকায় মাইকিং করে স্থানীয় লোকজনকে জড়ো করেন জলিল ফকিরের লোকজন। পরে আক্তার ও জলিলের লোকজন দেশী অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় বেশ কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। হাতবোমার আঘাতে ইউপি সদস্য আক্তার শিকদার ঘটনাস্থলেই নিহত হন। বোমায় গুরুতর আহত হন তাঁর ছেলে মারুফ শিকদার (২০)। শিকদারদের সঙ্গে ফকির বংশের লোকজনের দীর্ঘ বিরোধের কথা জানিয়ে মধ্যেরচর এলাকার বাসিন্দা রাজন হোসেন বলেন, ভোরে আক্তার শিকদার ও তাঁর দুই শতাধিক লোক প্রথমে জলিল ফকির, মোকলেস ফকির, মিজান আকন, শাহাবুদ্দিন ফকির, লাটু ব্যাপারী, বশার ব্যাপারী, আলী সরদারের বাড়িতে হামলা চালান। পরে তাঁরা একত্র হয়ে প্রতিরোধ গড়লে শিকদাররা পালান।
১৩. এমরান হোসেন
এমরানকে পেয়ে রফিকুল কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে হামলা করেন। একপর্যায়ে রফিকুল এমরানকে ছুরিকাঘাত করেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। এরপর এমরান মাটিতে লুটিয়ে পড়লে হামলাকারীরা তাঁকে ফেলে চলে যায়। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের দাবি, এটি তাঁদের ব্যক্তিগত বিরোধ। রাজনৈতিক কোনো কারণে খুনের ঘটনা ঘটেনি।
১৪. হিরু মাতুব্বর
দত্তপাড়া ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন বিএনপির নেতা মালেক মোল্লার সঙ্গে টুকু ফরাজির বিরোধ চলে আসছিল। রোববার রাতেও এই দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরই জেরে উভয় পক্ষের লোকজন আজ দুপুর ১২টার দিকে দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এলাকায় মহড়া দিয়ে আবার সংঘর্ষে জড়ান। এতে অহত হন উভয় পক্ষের অন্তত ছয়জন। এ সময় মালেক মোল্লার অনুসারী হিরু আর্য্যদত্তপাড়া এলাকায় গেলে তাঁকে একা পেয়ে কুপিয়ে জখম করেন টুকু ফরাজির লোকজন।
১৫. হামিদুল ইসলাম
ছাতারপাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের সমর্থক গাইন বংশ এবং বিএনপির সমর্থক পিয়াদা বংশের মধ্যে তিন যুগের বেশি সময় ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এদের বর্তমানে পিয়াদা বংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন গাদি নামে এক ব্যক্তি। আরেক পক্ষ নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন নিহত হামিদুল ইসলাম।
১৬. নজরুল ইসলাম
ছাতারপাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের সমর্থক গাইন বংশ এবং বিএনপির সমর্থক পিয়াদা বংশের মধ্যে তিন যুগের বেশি সময় ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এদের বর্তমানে পিয়াদা বংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন গাদি নামে এক ব্যক্তি। আরেক পক্ষ নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন নিহত হামিদুল ইসলাম।
১৭. পলাশ শেখ
ঘটনার দুই প্রত্যক্ষদর্শী প্রথম আলোকে বলেন, পলাশ শেখ প্রথমে ঘটনাস্থলে গিয়ে এক ব্যক্তিকে কোপাচ্ছিলেন। এতে দুজন আহত হন। এর কিছুক্ষণ পরই লোকজন একজোট হয়ে পলাশকে আটকে মারধর শুরু করেন। পলাশের হামলায় আহত দুজনের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। পুলিশ বলছে, নিজেদের মধ্যে বিরোধ থেকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে।
১৮. শামীম আহমেদ
গত ১৫ জুলাই রাতে উপাচার্যের বাসভবনের ছাত্রলীগের হামলায় শামীম জড়িত ছিলেন কি না, সেটা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন আহসান লাবিব। তখন শামীম নিজে জড়িত ছিলেন না দাবি করে ছাত্রলীগের দুজন নেতা জড়িত ছিলেন বলে স্বীকারোক্তি দেন।
১৯. সিরাজুল ইসলাম
প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর পাঁচগাঁও ইউনিয়নের মধুর বাজারে মহেশ দাস নামের একজনের দোকান লুট করা হয়। এ নিয়ে বাজারে উত্তেজনা ছিল। শুক্রবার সকালে মধুর বাজারে লুটের অভিযোগে রক্তা গ্রামের লোকজনের সঙ্গে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার ভাই কেওলা গ্রামের ছুনু মিয়ার কথা–কাটাকাটি হয়। কথা–কাটাকাটির বিষয়টি জানাজানি হলে কেওলা ও সারমপুর এবং রক্তা গ্রামের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
২০. সবুজ আকন্দ
বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলা যুবদল কর্মী জসিম উদ্দিনের (৩৪) নেতৃত্বে পৌর শহরের নতুনবাজার ম্যাক্সিস্ট্যান্ড দখল করতে যান তাঁর সমর্থকেরা। সেখানে যুবদলের আরেক পক্ষ সুমনের সমর্থকদের সঙ্গে তাঁদের বাগ্বিতণ্ডা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় সুমনের সমর্থকেরা জসিম উদ্দিনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন।
নিহতদের দলীয় পরিচয় বিশ্লেষণে যা জানা যায়
নিহতদের মধ্যে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনের ৭৫ নেতা-কর্মী, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সংগঠনের ১৮ জন নেতা-কর্মী, জামায়াতে ইসলামীর ২ নেতা-কর্মী, সাধারণ মানুষ ১১, ব্যবসায়ী ৪ জন, নৈশপ্রহরী, ভ্যানচালক, রিকশাচালক, ছাত্র ও প্রবাসী রয়েছেন।