চলতি বছর ঈদুল আজহায় দেশে কুরবানিকৃত পশুর সংখ্যা কমে এসেছে লক্ষাধিক। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ঈদে মোট ৯১ লাখ ১৩৬ হাজার ৭৩৪টি পশু কুরবানি হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় পৌনে ১৩ লাখ কম।
২০২৪ সালে কুরবানিকৃত পশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৪ লাখ ৮ হাজার ৯১৮টি। এই তুলনায় দেখা যাচ্ছে, এবার প্রায় ১২ লাখ ৭২ হাজার পশু কম কুরবানি হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, এ বছরের কুরবানিকৃত পশুর মধ্যে গরু ও মহিষ ছিল ৪৭ লাখ ৫ হাজার ১০৬টি। ছাগল ও ভেড়া ছিল ৪৪ লাখ ৩০ হাজার ৬৬৮টি এবং অন্যান্য প্রকার পশু ছিল ৯৬০টি।
বিভাগভিত্তিক চিত্র: কারা এগিয়ে, কারা পিছিয়ে?
তথ্য বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, সর্বাধিক পশু কুরবানি হয়েছে রাজশাহী বিভাগ (Rajshahi Division)-এ, যেখানে কুরবানিকৃত পশুর সংখ্যা ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৯৭১টি। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ঢাকা বিভাগ (Dhaka Division), সেখানে কুরবানির সংখ্যা ছিল ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৪০টি।
অন্যান্য বিভাগগুলোর মধ্যে চট্টগ্রামে কুরবানি হয়েছে ১৭ লাখ ৫৩ হাজার ৭৩২টি, খুলনায় ৮ লাখ ৪ হাজার ২২৪টি, রংপুরে ৯ লাখ ৬৪ হাজার ৯৯৯টি এবং বরিশালে ৪ লাখ ৭৮৩টি।
অন্যদিকে, সবচেয়ে কম কুরবানি হয়েছে সিলেট বিভাগ (Sylhet Division)-এ—মোট ৩ লাখ ১৯ হাজার ৮২৩টি পশু। এরপরেই আছে ময়মনসিংহ বিভাগ (Mymensingh Division), যেখানে কুরবানিকৃত পশুর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৮৩ হাজার ১৬২টি।
অবিক্রীত পশুর সংখ্যা ৩৩ লাখের বেশি
এবার পশু অবিক্রীত থাকার সংখ্যাও কম নয়। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, মোট ৩৩ লাখ ১০ হাজার ৬০৩টি পশু কুরবানির জন্য প্রস্তুত থাকলেও শেষ পর্যন্ত বিক্রি হয়নি।
এর পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে মন্ত্রণালয় বলছে, উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় সরবরাহ চাহিদার চেয়ে বেশি হয়ে পড়ে। এতে অতিরিক্ত পশু অবিক্রীত থেকে যায়। যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এটিকে অস্বাভাবিক মনে করছে না। তাদের ব্যাখ্যায়, “এই পশুগুলো সামনে বিয়ে, আকিকা, ওয়াজ মাহফিলসহ অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হবে।”
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এ হিসাব প্রণয়ন করেছে স্তরায়িত দৈব নমুনায়ন পদ্ধতিতে। দেশের প্রতিটি উপজেলার তিনটি ভিন্ন আকারের গ্রাম (ছোট, মাঝারি ও বড়) থেকে অন্তত এক শতাংশ নমুনা সংগ্রহ করে এই তথ্য তৈরি করা হয়েছে।