ইউনূস তারেকের বৈঠকে কি থাকছে আলোচনার বিষয়ে, যা জানালেন সালাউদ্দিন

জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমা ও অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা ঘিরে বিএনপির ভেতরে স্পষ্ট মতপার্থক্য দেখা দিলেও, সেই মতপার্থক্য মিটিয়ে সমাধানের পথ খুঁজতে এখন মুখোমুখি লন্ডনে বসেছেন তারেক রহমান (Tarique Rahman) ও ড. মোহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus)। আলোচিত এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে রয়েছে পুরো জাতি, কারণ এর ফলাফলই নির্ধারণ করতে পারে আগামী নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক পটভূমি।

বিএনপি (BNP) এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্প্রতি বলেছেন, “ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে।” অন্যদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের মতে, ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একদিনেই উপযুক্ত সময়। এই ভিন্নমতের মধ্যেই শুরু হয়েছে তাদের বৈঠক, যার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে নির্বাচনকালীন সময়সূচি, সরকারের নিরপেক্ষতা এবং প্রশাসনিক সংস্কার।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ (Salahuddin Ahmed) জানিয়েছেন, “প্রধান উপদেষ্টা এবং তিনি (তারেক রহমান) যদি একান্তে আলাপ করে একটা গ্রহণযোগ্য অবস্থানে পৌঁছাতে পারেন, তাহলে একটি সন্তোষজনক সমাধান সম্ভব। সেটা ডিসেম্বরের আগেও হতে পারে, আবার পরেও। সবই নির্ভর করছে আলোচনার ফলাফলের ওপর।”

তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে জনগণের বিভ্রান্তি দূর হবে এবং নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে।”

ফ্যাসিবাদী দোসরদের অপসারণ ও নির্বাচনী সংস্কার গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু

বৈঠকে প্রশাসন থেকে তথাকথিত ‘ফ্যাসিস্ট দোসরদের’ অপসারণের বিষয়টি প্রাধান্য পাবে বলেও জানান সালাহউদ্দিন আহমেদ। তার ভাষায়, “যারা ফ্যাসিবাদের দোসর, তাদেরকে প্রশাসনসহ সর্বস্তর থেকে অপসারণ করতে হবে। এটা একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পূর্বশর্ত।”

এছাড়া নির্বাচনমুখী সংস্কার বাস্তবায়ন, অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা, সংবিধানবহির্ভূত সংস্কার এক মাসের মধ্যে কার্যকর, এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কিছু মামলার ট্রায়াল শুরু করার মতো বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।

জুলাই সনদ ও আইনের শাসন নিয়েও আলোচনা

বিএনপি নেতাদের মতে, আলোচনায় থাকবে ‘জুলাই সনদ’ এবং গণহত্যার বিচারের প্রসঙ্গও। আইনের শাসন, নির্বাচনকে ঘিরে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের উদ্যোগ এবং সামগ্রিক নিরাপত্তা বিষয়েও দিকনির্দেশনা আসতে পারে এই বৈঠক থেকে।

বিএনপির অভ্যন্তরীণ মতানৈক্য স্পষ্ট হলেও, তারেক রহমান ও ড. ইউনূসের এই বৈঠক রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে আশার আলো জাগাচ্ছে। আলোচনা ফলপ্রসূ হলে নির্ধারিত সময় কিংবা যৌক্তিক বিলম্বে একটি সর্বজনগ্রাহ্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পথ সুগম হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *