সাতক্ষীরার দেবহাটার পুষ্পকাটি গ্রামে চাঁদা আদায়ের চেষ্টাকালে তিনজন সমন্বয়ককে সেনাবাহিনীর হাতে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য গোলাম রব্বানী (Golam Rabbani) ও তার ভাইয়ের বাড়িতে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন দেবহাটা উপজেলার বহেরা গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে নাহিদ হাসান, শ্যামনগর উপজেলার কৈখালি গ্রামের আত্তাব মোল্যার ছেলে আব্দুর রহিম, এবং আশাশুনি উপজেলার এক সমন্বয়ক যার নাম জানা গেছে আব্দুর রহমান।
ইউপি সদস্য গোলাম রব্বানী জানান, দুপুরের দিকে পাঁচজন ব্যক্তি তার বাড়িতে প্রবেশ করে নিজেদের ‘পুলিশ’ পরিচয় দেয়। এর মধ্যে তিনজন তার ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে ব্যবসার নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার চুরির চেষ্টা করে। একইসাথে বাকি দুইজন তার ভাই আব্দুর রবের ঘরে প্রবেশ করে একই কৌশলে হুমকি দেয়। অভিযুক্তদের মধ্যে দু’জন পালিয়ে গেলেও, তিনজনকে বাড়ির লোকজন আটক করে এবং সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি সাতক্ষীরা সেনা ক্যাম্পে জানানো হয়। পরে সেনাবাহিনীর একটি ইউনিট এসে তিনজনকে আটক করে নিয়ে যায়।
অন্যদিকে, দেবহাটা উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মুজাহিদ বিন ফিরোজ (Mujahid Bin Firoz) এক ভিন্ন দাবি তুলে ধরেছেন। তার বক্তব্য, “আওয়ামী লীগ আমলে রব্বানী মেম্বর বহু অপকর্মে জড়িত ছিলেন। জেলা সমন্বয়করা তাকে ধরতে গিয়েছিলেন। বিষয়টি আমাকে জানালে আমি পুলিশ পাঠাই। কিন্তু রব্বানীর লোকজন তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ডাকাতির অভিযোগ তুলে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।”
এ ঘটনায় এখনো কেউ থানায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেননি, তবে ইউপি সদস্যর স্ত্রী বাদী হয়ে দেবহাটা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম কিবরিয়া হাসান (Golam Kibria Hasan) গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “আমি আটকের খবর শুনেছি। যেহেতু সেনাবাহিনী তাদের আটক করেছে, এবং এখনো আমাদের কাছে হস্তান্তর করেনি, তাই বিস্তারিত বলতে পারছি না।”
স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে এই ঘটনা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। একপক্ষ বলছে, এটি একটি সাজানো ঘটনা; অন্যপক্ষ দাবি করছে এটি ছিল সুনির্দিষ্ট অপরাধমূলক তৎপরতা। তবে সেনাবাহিনীর পদক্ষেপে অনেকেই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।