লন্ডনে ইউনূস-তারেক যৌথ বিবৃতি নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছে: জামায়াতের অভিযোগ

লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus) এবং বিএনপি (BNP) নেতা তারেক রহমান (Tarique Rahman)-এর বৈঠকের পর দেওয়া যৌথ প্রেস ব্রিফিংকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয় এবং প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্নকারী বলে আখ্যা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (Bangladesh Jamaat-e-Islami)।

শনিবার (১৪ জুন) দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠক শেষে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ অবস্থান জানায় জামায়াত। সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান। সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই বক্তব্য নিশ্চিত করেছেন দলের প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ।

জামায়াত বলেছে, লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৈঠক নিজে থেকেই অস্বাভাবিক ছিল না। কিন্তু বৈঠকের পর বিদেশের মাটিতে যৌথ প্রেস ব্রিফিং এবং যৌথ বিবৃতি দেওয়া ছিল রাজনৈতিক সৌজন্যের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়া। দলটির মতে, এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

বিশেষত ৬ জুন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ইউনূস যখন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন, ঠিক তার পরপরই একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যৌথ অবস্থান গ্রহণ করা “পূর্বপরিকল্পিত পক্ষপাতের ইঙ্গিত” বলেই মনে করছে জামায়াত।

তারা বলছে, দেশে ফিরে এসে প্রধান উপদেষ্টা যদি অন্যান্য সক্রিয় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করতেন, তবে এমন একটি যৌথ বিবৃতির গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি হতো।

জামায়াতের মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে এককভাবে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যৌথ প্রেস ব্রিফিং দেওয়া নৈতিকভাবে সঠিক নয়। এতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে জনমনে যে আশা তৈরি হয়েছিল, তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।

দলটি আরো বলেছে, “বাংলাদেশে একাধিক সক্রিয় রাজনৈতিক দল রয়েছে। শুধুমাত্র একটি দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সার্বিক রাজনৈতিক ইস্যুতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।”

এ প্রেক্ষিতে জামায়াত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, তারা যেন অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য সমান সুযোগ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) নিশ্চিত করে এবং বিচার ও রাজনৈতিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়।

তারা স্পষ্টভাবে বলেছেন, নির্বাচনের আগে জনগণের মধ্যে যেভাবে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার উচিত জাতির সামনে তার ভূমিকা পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *