লন্ডন বৈঠক নিয়ে জামায়াত-এনসিপি’র অভিযোগের জবাব দিলেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন

লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus) ও বিএনপি (BNP) নেতা তারেক রহমানের (Tarique Rahman) বৈঠকের পর দেওয়া যৌথ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে জামায়াতে ইসলামীর (Bangladesh Jamaat-e-Islami) সমালোচনার জবাব দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা কোনো দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ দেখাননি। বরং ২০২৬ সালের রমজানের আগে, ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে জামায়াতের আমির নিজেই আগেই যে দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছিলেন, সেটির সঙ্গেই এই ঘোষণার সময়সীমা মিলে যায়।”

শনিবার বিকেলে প্রথম আলোকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “জামায়াতের প্রতিক্রিয়াতেই উল্লেখ আছে—গত ১৬ এপ্রিল জামায়াতের আমির একটি বিদেশি কূটনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে বসে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, নির্বাচন রোজার আগে হতে পারে। এখন যদি ইউনূস-তারেক ঘোষণাতেও সেই সময়সীমা আসে, তাহলে একে পক্ষপাত বলা চলে না।”

তিনি আরও বলেন, “এই বৈঠক কোনো গোপন চুক্তি নয়, বরং রাজনৈতিক আলোচনার একটি পরিণত ফল, যা সকলেরই পূর্ববর্তী অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।”

লন্ডন বৈঠকের যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে ২০২৬ সালের রমজানের আগে, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে। এ ঘোষণার পর জামায়াতে ইসলামীসহ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী তরুণদের দল এনসিপি (National Citizens’ Platform – NCP) অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।

তবে সালাহউদ্দিন আহমদের মতে, “নতুন রাজনৈতিক দল এই ঘোষণা দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছে। বাস্তবতা হলো, বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিতে হলে রাজনৈতিক পরিপক্বতা ও অভিজ্ঞতা জরুরি।”

তিনি এনসিপির প্রতিক্রিয়ার জবাব দিয়ে বলেন, “জুলাই সনদ, মৌলিক সংস্কার এবং বিচারের রোডম্যাপ—এসব বিষয় গুরুত্বপূর্ণ হলেও সেগুলোর সঙ্গে নির্বাচনকালীন আলোচনার কোনো সাংঘর্ষিকতা নেই। আলোচনা একে অপরের পরিপূরক।”

বিএনপি নেতা মনে করেন, নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ প্রশ্নে সরকারের সঙ্গে বিএনপির সমঝোতা দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতিফলন। তবে তিনি বলেন, “এই সমঝোতা মানে এই নয় যে অন্য রাজনৈতিক দলদের উপেক্ষা করা হচ্ছে। বরং সকল দলের মতামতের ভিত্তিতে একটি পূর্ণাঙ্গ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী রূপরেখা তৈরি হোক, সেটাই আমাদের চাওয়া।”

বেশ কয়েকটি ইসলামপন্থী দল যেমন জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস এ ঘোষণাকে ‘নৈতিক প্রশ্নে দুর্বল’ আখ্যা দিলেও, সালাহউদ্দিন আহমদের বক্তব্যে স্পষ্ট—এটি রাজনৈতিক পক্ষপাত নয়, বরং বাস্তবতার নিরিখে গঠিত একটি যৌথ অঙ্গীকার।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *