বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়ায় এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় এসেছে। বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের সঙ্গে জড়িত প্রাক্তন প্রধান নির্বাচন কমিশনার, কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস (Professor Muhammad Yunus)।
সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টা এই নির্দেশনা দেন সংশ্লিষ্টদের।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন, ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বৈঠকে কমিশনের সদস্যরা ‘জুলাই সনদ’ তৈরির অগ্রগতি প্রধান উপদেষ্টার সামনে তুলে ধরেন।
কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, “বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। খুব শিগগিরই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, “যেখানেই গিয়েছি, প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে প্রশ্ন করেছেন, ‘আমরা কি আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারবো?’ বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা সংস্কার নিয়ে খুবই আগ্রহ দেখিয়েছে। তাই প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে পোস্টাল ব্যালটসহ অন্যান্য পদ্ধতির কথা ভেবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।”
বদিউল আলম মজুমদার, যিনি নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান, বৈঠকে বলেন, “সব রাজনৈতিক দল একমত যে, অতীতের তিনটি বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনের আয়োজনে যারা যুক্ত ছিলেন—তাদের ভূমিকা তদন্ত ও জবাবদিহিতার আওতায় আনা এখন প্রয়োজন।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই উদ্যোগ নির্বাচনী সংস্কার এবং ভবিষ্যতের সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক ভোট আয়োজনের ক্ষেত্রে একটি দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ হতে পারে।