নারীর মর্যাদা যেন কোটার গন্ধ না পায়: নারী প্রার্থী বিষয়ে নতুন মডেল প্রস্তাব করলেন রাশেদ খান

নারীদের জন্য ১০০টি আসন বরাদ্দ করে তাদের সরাসরি নির্বাচনের প্রস্তাব নিয়ে যে আলোচনা চলছে, সে বিষয়ে ভিন্নধারার চিন্তা হাজির করেছেন রাশেদ খান (Rashed Khan)। গণঅধিকার পরিষদ (Gonodhikar Parishad)–এর সাধারণ সম্পাদক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে এমন একটি পদ্ধতির প্রস্তাব দিয়েছেন, যেখানে নারীদের সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে, তবে ‘কোটা’ ভাবনার জন্ম না দিয়ে।

তিনি লিখেছেন, “৩০০ আসন পুরুষের, ১০০ আসন নারীর! এটাও একধরনের প্রশ্ন তৈরি করবে।” তার মতে, এই ধরনের প্রক্রিয়া নারীদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণকে কোটা-নির্ভর হিসেবে তুলে ধরবে এবং তা নারীর মর্যাদার সাথেও সাংঘর্ষিক হতে পারে।

রাশেদ খান প্রস্তাব দেন, আসন সংখ্যা ৪০০ ধরা হলে দলগুলোর উপর আইন করে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা যেতে পারে, যাতে তারা কমপক্ষে ১০০ আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেয়। তবে সেসব আসনে কেবল নারীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়, বরং নারী-পুরুষ উভয়ের অংশগ্রহণ থাকবে—এভাবেই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নারীরা জয়ী হয়ে আসবেন।

তিনি লিখেছেন, “এতে বার্তা যাবে, প্রতিযোগিতার মাধ্যমেই নারী জিতে এসেছে। এতে নারীর মর্যাদাও বাড়বে।”

রাশেদ খান আরও উল্লেখ করেন, ১০০ আসনে নারীদের সরাসরি নির্বাচনের যে কথা এখন প্রচার হচ্ছে, সে বিষয়ে নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের মধ্যেই ঐকমত্য নেই। তার ভাষায়, “তাদের মধ্যেই মতপার্থক্য রয়েছে যে, কোন প্রক্রিয়ায় তারা ১০০ আসনে নারীদের সরাসরি ভোটে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে।”

তিনি জানান, এর আগেও তিনি ঐক্যমত কমিশনকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। কিন্তু তারা সুনির্দিষ্ট কোনো প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করতে পারেনি। তাই তার দাবি, জাতির সামনে পরিষ্কারভাবে একটি বাস্তবসম্মত ও যুক্তিযুক্ত প্রস্তাবনা হাজির করা হোক, যাতে জনগণ তা বিচার করতে পারে এবং মতামত দিতে পারে।

রাশেদ খান যুক্তি তুলে ধরেন, বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় যেমন নারীরা ভালো করছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষাতেও প্রায় সমান হারে নারী-পুরুষ চান্স পাচ্ছে। সেই বাস্তবতা বিবেচনায় তার প্রস্তাব, “নারীদের জন্য কোটা নয়, বরং তাদেরও পূর্ণাঙ্গ প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ দেওয়া হোক—তাতে নারী জয়ী হলে তা হবে মর্যাদাসম্পন্ন অর্জন।”

এই প্রস্তাবনার মধ্য দিয়ে তিনি মূলত সংবিধানিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর মধ্যেই একটি ভারসাম্য খোঁজার চেষ্টা করেছেন, যাতে নারীর অংশগ্রহণ যেমন বাড়ে, তেমনি গণতান্ত্রিক প্রতিযোগিতার স্বাভাবিক রূপও বজায় থাকে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *