জাতীয় ঐকমত্য সংলাপে জামায়াতের প্রাধান্য নিয়ে হট্টগোল, সিপিবি-গণফোরামের ওয়াকআউট

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে জামায়াতে ইসলামীর (Jamaat-e-Islami) নেতাদের অতিরিক্ত সময় ও সুযোগ দেওয়ার অভিযোগ তুলে ওয়াকআউট করলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (Communist Party of Bangladesh, CPB) এবং গণফোরাম (Gono Forum)-এর নেতারা। পরে আয়োজকদের মধ্যস্থতায় তারা আবারও আলোচনায় ফিরে যান।

বুধবার (১৮ জুন) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত রাজনৈতিক সংলাপে উত্তেজনার সূচনা ঘটে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের বক্তব্য শেষে বিএনপি (BNP) নেতা সালাহউদ্দীন আহমেদ তার বক্তব্য শুরু করলে।

প্রথমে উত্তেজিত হয়ে সংলাপ কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান। তিনি সংলাপস্থল ত্যাগ করার সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এখানে কিসের সংলাপ হচ্ছে, কার সাথে সংলাপ করবো! তারা যা ইচ্ছা তাই করছে।” এরপর সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স (Ruhin Hossain Prince) ও অপর এক প্রতিনিধি আলোচনার স্থান ত্যাগ করেন।

সংলাপস্থলের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম (Shahadat Hossain Selim) মিজানুর রহমানকে আলোচনায় ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। রুহিন হোসেন প্রিন্সও তখন সাংবাদিকদের কাছে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, “জামায়াতে ইসলামী থেকে তিনজন কথা বলেছেন। আমাদের একজন প্রতিনিধি কথা বলতে চাইলেও তাকে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমরা সেই বৈষম্যের প্রতিবাদে বের হয়েছিলাম। তবে আয়োজকরা আমাদের বক্তব্য শুনেছেন এবং নোট নিয়েছেন, তাই আমরা আলোচনায় ফিরে যাচ্ছি।”

শাহাদাৎ হোসেন সেলিম এসময় বলেন, “আমরা যখন কথা বলছিলাম, তখন আমাদের থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ জামায়াতের প্রতিনিধি যখন অপ্রাসঙ্গিক কথা বলছিলেন, আমি তাকে বলি এটি প্রাসঙ্গিক নয়। তখন সে উল্টো জিজ্ঞেস করে—আপনি কতজন মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করেন?”

এই ঘটনা আবারও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে সংলাপের পরিচালনা ও সময় বণ্টনের ভারসাম্য নিয়ে। একদিকে যেখানে জামায়াত নেতাদের একাধিকবার বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ মিলেছে, অন্যদিকে অন্য দলগুলো সুযোগ সীমিত পেয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার ওয়াকআউট করা নেতাদের বোঝাতে সক্ষম হন, তবু সংলাপের স্বচ্ছতা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ভবিষ্যতে আরও ভারসাম্য দরকার বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *